পয়সা ছাড়া কে চলতে পারে? যারা হতদরিদ্র তারাও টিকে থাকতে কিছু পয়সা জোগাড়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু আইরিশম্যান মার্ক বয়েল সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র মানুষ যিনি টিকে রয়েছেন পয়সা ছাড়া। তার না আছে এক পয়সা উপার্জন, না আছে এক পয়সা খরচ। অথচ দিব্যি খেয়ে-পরে জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
অদ্ভূত পরিকল্পনার কথা নিজেই জানালেন মার্ক। বললেন, সাত বছর আগে আমার বিজনেস এবং ইকোনমিকস ডিগ্রির শেষ বর্ষে কেউ যদি অর্থ ছাড়া বেঁচে থাকার কথা বলতেন, তাহলে ভয়েই দম বন্ধ হয়ে আসত। স্বাভাবিকভাবেই পরিকল্পনা ছিল, ডিগ্রি শেষ করে ভালো চাকরি নিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। বড় এক অর্গানিক ফুড কম্পানিতে চাকরিও পেলেন। এক সময় হার্বারে একটি ইয়টের মালিকও বনে গেলেন তিনি। ঠিক সে সময়টিতে তিনি যদি একটি ভিডিওচিত্র না কিনতেন, তাহলে এত দিনে হয়তো আরো বহু টাকার মালিক হয়ে যেতেন। ওই ভিডিওচিত্রটির নাম ছিল 'গান্ধী'। আজ ১৫ মাস হতে চলল তার কাছে এক কানাকড়িও নেই।
সেই বিশেষ দিনটির কথা বললেন মার্ক, আমার ইয়টে বসেই বিভিন্ন মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা চলছিল এক বন্ধুর সঙ্গে। সে সময় মহাত্মা গান্ধীর জীবনী নিয়ে সেই ভিডিওচিত্র দেখেছি। গান্ধীর 'Be the change you want to see in the world'- বাক্যটি প্রভাবিত করে। যদিও তখনো জানি না কী পরিবর্তন আমি দেখতে চাই।
এরপর বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা হয় বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশাল সমস্যার মধ্যে তারা দুজন কোন পথে এগোতে পারে তা নিয়েও কোনো সমাধান বের হলো না। ব্যাপক দূষিত মহা সমুদ্রের মাঝে তারা দুই ফোঁটা দূষিত পানিমাত্র।
ওইদিন বিকেলেই মার্ক উপলব্ধি করলেন, যাততীয় সমস্যার মূল একটি স্থানে। আর সেখান থেকেই ডালপালা মেলে দিয়েছে চারদিকে। একজন মানুষ অপরজনের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। আবার অনেকে পরোক্ষভাবে অন্যের সমস্যার কারণ হচ্ছেন যা তারা নিজেরাও বুঝতে পারেন না। আর এসবের মূল কারণ অর্থ-কড়ি-টাকা-পয়সা। বিশেষ করে অর্থের গ্লোবাল ফরমেটের কারণে তা বিশাল আকার ধারণ করেছে।
মার্কের মতে, আমরা যদি জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ নিজেরাই করি, তবে সবকিছুর প্রতি ভালোবাসা থাকে। এসব নানা উপলব্ধি থেকেই মার্ক নতুন মতাদর্শ উপলব্ধি করলেন। এক বছর সময়ের মধ্যে তালিকা করলেন, কী কী জিনিস জীবনে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন। সেগুলো যোগাড় করে পয়সাকে বিদায় জানালেন।
প্রথমেই প্রয়োজন খাবার। চারভাবে খাদ্যের সন্ধান মেলে। প্রকৃতি থেকে খাবার সংগ্রহ, উৎপাদন করে নেওয়া, বিনিময় এবং উচ্ছিষ্ট।
প্রথম দিন বিনিময় এবং উচ্ছিষ্ট খাদ্য দিয়ে মার্ক শুধু নিজেই খাননি, আরো ১৫০ জন দরিদ্রকে খাইয়েছেন। এখন তিনি কিছু খাবার উৎপন্ন করেন এবং মাত্র ৫ শতাংশ উচ্ছিষ্ট হয়। একটি রকেট স্টোভে বৃষ্টিতে ভিজে এবং রোদে শুকিয়ে রান্না করি, জানালেন মার্ক।
পরের চাহিদা বাসস্থান। যে প্রতিষ্ঠানে আগে চাকরি করতেন তাদের কাছ থেকে একটি ক্যারাভান যোগাড় করেছেন। আলোর জন্য কিছুটা উদ্ভাবনী প্রয়োগ করেছেন। সবজির উৎপাদনের জন্য কম্পোস্ট ব্যবহার করছেন। এটি বানাচ্ছেন পচা খাবারসহ অন্যান্য দ্রব্য থেকে। হার্বাল গাছের বীজ বা ছাল এবং নদীর কাটলফিশের হাড় দিয়ে পেস্ট বানিয়ে দাঁত মাজেন। নদীতে গোসল করেন। প্রতিটি প্রাকৃতিক উপাদানের চরম ব্যবহার তিনি আয়ত্ত করে নিয়েছেন। শহরে যেতে যে ৫৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়, তা দিয়ে শরীর চর্চার কাজটিও সম্পন্ন হয়।
অনেকেই মার্কের এই জীবনযাত্রা দেখে বলেন, তিনি অ্যান্টি-ক্যাপিটালিস্ট। আসলে তিনি চেয়েছেন প্রকৃতির মানব হতে। প্রকৃতি জীবনে দুর্যোগ বয়ে আনে। কিন্তু যতো দুঃখ, কষ্ট, সুখের অভাব আর অপরাধ বয়ে আনে অর্থ।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, গত এক বছর ধরে জীবনের সবচেয়ে সুখের সময় কাটাচ্ছেন মার্ক। তিনি বন্ধুত্ব খুঁজে পেয়েছেন যা পুরোপুরি আসল। অর্থ নেই, পরাধীনতা নেই আবার নেই নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে আধ্যাত্মবাদের মতো অনেকটা, জানান মার্ক। আধুনিকতার কাছে থেকে যারা মুক্তি চান, মার্ক হতে পারেন তাদের আদর্শ।
আর এসব নিয়ে দিব্যি সুখী জীবনযাপন করছেন মার্ক। তাই যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বেঁচে রয়েছেন, সেই পরিবর্তনটা নিজের ভেতরে আনুন। এটাই মার্কের পরামর্শ। সূত্র : ইন্টারনেট
অদ্ভূত পরিকল্পনার কথা নিজেই জানালেন মার্ক। বললেন, সাত বছর আগে আমার বিজনেস এবং ইকোনমিকস ডিগ্রির শেষ বর্ষে কেউ যদি অর্থ ছাড়া বেঁচে থাকার কথা বলতেন, তাহলে ভয়েই দম বন্ধ হয়ে আসত। স্বাভাবিকভাবেই পরিকল্পনা ছিল, ডিগ্রি শেষ করে ভালো চাকরি নিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। বড় এক অর্গানিক ফুড কম্পানিতে চাকরিও পেলেন। এক সময় হার্বারে একটি ইয়টের মালিকও বনে গেলেন তিনি। ঠিক সে সময়টিতে তিনি যদি একটি ভিডিওচিত্র না কিনতেন, তাহলে এত দিনে হয়তো আরো বহু টাকার মালিক হয়ে যেতেন। ওই ভিডিওচিত্রটির নাম ছিল 'গান্ধী'। আজ ১৫ মাস হতে চলল তার কাছে এক কানাকড়িও নেই।
সেই বিশেষ দিনটির কথা বললেন মার্ক, আমার ইয়টে বসেই বিভিন্ন মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা চলছিল এক বন্ধুর সঙ্গে। সে সময় মহাত্মা গান্ধীর জীবনী নিয়ে সেই ভিডিওচিত্র দেখেছি। গান্ধীর 'Be the change you want to see in the world'- বাক্যটি প্রভাবিত করে। যদিও তখনো জানি না কী পরিবর্তন আমি দেখতে চাই।
এরপর বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা হয় বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশাল সমস্যার মধ্যে তারা দুজন কোন পথে এগোতে পারে তা নিয়েও কোনো সমাধান বের হলো না। ব্যাপক দূষিত মহা সমুদ্রের মাঝে তারা দুই ফোঁটা দূষিত পানিমাত্র।
ওইদিন বিকেলেই মার্ক উপলব্ধি করলেন, যাততীয় সমস্যার মূল একটি স্থানে। আর সেখান থেকেই ডালপালা মেলে দিয়েছে চারদিকে। একজন মানুষ অপরজনের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। আবার অনেকে পরোক্ষভাবে অন্যের সমস্যার কারণ হচ্ছেন যা তারা নিজেরাও বুঝতে পারেন না। আর এসবের মূল কারণ অর্থ-কড়ি-টাকা-পয়সা। বিশেষ করে অর্থের গ্লোবাল ফরমেটের কারণে তা বিশাল আকার ধারণ করেছে।
মার্কের মতে, আমরা যদি জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ নিজেরাই করি, তবে সবকিছুর প্রতি ভালোবাসা থাকে। এসব নানা উপলব্ধি থেকেই মার্ক নতুন মতাদর্শ উপলব্ধি করলেন। এক বছর সময়ের মধ্যে তালিকা করলেন, কী কী জিনিস জীবনে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন। সেগুলো যোগাড় করে পয়সাকে বিদায় জানালেন।
প্রথমেই প্রয়োজন খাবার। চারভাবে খাদ্যের সন্ধান মেলে। প্রকৃতি থেকে খাবার সংগ্রহ, উৎপাদন করে নেওয়া, বিনিময় এবং উচ্ছিষ্ট।
প্রথম দিন বিনিময় এবং উচ্ছিষ্ট খাদ্য দিয়ে মার্ক শুধু নিজেই খাননি, আরো ১৫০ জন দরিদ্রকে খাইয়েছেন। এখন তিনি কিছু খাবার উৎপন্ন করেন এবং মাত্র ৫ শতাংশ উচ্ছিষ্ট হয়। একটি রকেট স্টোভে বৃষ্টিতে ভিজে এবং রোদে শুকিয়ে রান্না করি, জানালেন মার্ক।
পরের চাহিদা বাসস্থান। যে প্রতিষ্ঠানে আগে চাকরি করতেন তাদের কাছ থেকে একটি ক্যারাভান যোগাড় করেছেন। আলোর জন্য কিছুটা উদ্ভাবনী প্রয়োগ করেছেন। সবজির উৎপাদনের জন্য কম্পোস্ট ব্যবহার করছেন। এটি বানাচ্ছেন পচা খাবারসহ অন্যান্য দ্রব্য থেকে। হার্বাল গাছের বীজ বা ছাল এবং নদীর কাটলফিশের হাড় দিয়ে পেস্ট বানিয়ে দাঁত মাজেন। নদীতে গোসল করেন। প্রতিটি প্রাকৃতিক উপাদানের চরম ব্যবহার তিনি আয়ত্ত করে নিয়েছেন। শহরে যেতে যে ৫৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়, তা দিয়ে শরীর চর্চার কাজটিও সম্পন্ন হয়।
অনেকেই মার্কের এই জীবনযাত্রা দেখে বলেন, তিনি অ্যান্টি-ক্যাপিটালিস্ট। আসলে তিনি চেয়েছেন প্রকৃতির মানব হতে। প্রকৃতি জীবনে দুর্যোগ বয়ে আনে। কিন্তু যতো দুঃখ, কষ্ট, সুখের অভাব আর অপরাধ বয়ে আনে অর্থ।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, গত এক বছর ধরে জীবনের সবচেয়ে সুখের সময় কাটাচ্ছেন মার্ক। তিনি বন্ধুত্ব খুঁজে পেয়েছেন যা পুরোপুরি আসল। অর্থ নেই, পরাধীনতা নেই আবার নেই নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে আধ্যাত্মবাদের মতো অনেকটা, জানান মার্ক। আধুনিকতার কাছে থেকে যারা মুক্তি চান, মার্ক হতে পারেন তাদের আদর্শ।
আর এসব নিয়ে দিব্যি সুখী জীবনযাপন করছেন মার্ক। তাই যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বেঁচে রয়েছেন, সেই পরিবর্তনটা নিজের ভেতরে আনুন। এটাই মার্কের পরামর্শ। সূত্র : ইন্টারনেট