বিষয়টি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ ইদানীং সে দেশে হিজাব পরা নারীর সংখ্যা বেড়েছে৷ কিন্তু তাদের শরীরে থাকছে আঁটসাঁট পোশাক – মুসলিম পণ্ডিতরা যেটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন৷ ইন্দোনেশিয়ায় এ ধরনের পোশাক জিলবুবস নামে পরিচিতি পেয়েছে৷ শব্দটা আলাদা দুটো শব্দের মিশ্রণ৷ জিল এসেছে জিলবাব থেকে৷ ইন্দোনেশিয়ায় হিজাবের আরেক নাম এটি৷ আর স্তন শব্দের প্রচলিত স্ল্যাং বা অপশব্দ হচ্ছে বুবস৷ আঁটসাঁট পোশাক হচ্ছে সেটা, যা পরলে স্তন আর পেছনের দিকটা প্রকাশিত হয়ে যায়৷
আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্দোনেশিয়ান কাউন্সিল অফ মুসলিম স্কলারস সম্প্রতি জিলবুবস পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ সংস্থার ডেপুটি চেয়ারম্যান মারুফ আমিন বলেন, নারীরা যে জিলবাব পরছে সেটাকে আমরা স্বাগত জানায়৷ কিন্তু অনেকে দেখা যাচ্ছে তার সঙ্গে এমন পোশাক পরছে যেটা শরীরের বিশেষ অংশ বের করে দিচ্ছে৷ আমরা (কাউন্সিল) এটা একেবারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি৷
এই সংস্থার কোনো নিয়ম জনগণ মানতে বাধ্য নয়৷ তাই ইন্দোনেশীয়রা এতদিন কাউন্সিলের ঘোষণাগুলো উপেক্ষাই করে এসেছে৷
তবে কাউন্সিলের এবারের সিদ্ধান্তে ইন্দোনেশিয়ার নারীদের মধ্যে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ কেউ এটাকে সমর্থন করছেন, কেউ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে৷ আবার একটা অংশ আছে যাঁরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মজার সমালোচনা করেছেন৷
নারীবাদী লেখক জুলিয়া সুরিয়াকুসুমা জাকার্তা পোস্ট-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে মুসলিম পণ্ডিতদের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের নিন্দাজানিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, জিলবুবস হচ্ছে ধর্ম বিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বায়িত চেতনার সংমিশ্রন....একটা ফ্যাশন ট্রেন্ড৷
মুসলিম লেখক আসমা নাদিয়া মনে করেন, জিলবুবস নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সেটা মুসলিম রীতি যাঁরা পালন করছেন সেসব নারীদের জন্য একটা সতর্কবাণী৷ মুসলিম নারী যাঁরা শরীর ঢাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁদের পোশাক পরায় আরেকটু সাবধান হওয়া উচিত৷
তিনি মনে করেন, শালীনতাবোধটাই যদি মূল বিবেচ্য বিষয় হয় তাহলে ফ্যাশন আর শালীনতাবোধ একসঙ্গে চলতে পারে৷ এদিকে ফেসবুকে একটি পেজ খোলা হয়েছে যেখানে মেয়েরা তাঁদের জিলবুবস পরা ছবি পোস্ট করছেন৷ ফেব্রুয়ারি মাসে খোলা এই পেজে ইতিমধ্যে প্রায় ৪২ হাজার লাইক পড়েছে৷