গোটা বিশ্ব দেখেছে, ইতালির ডিফেন্ডার জর্জো কিয়েলিনির কাঁধে কামড়ের দাগ। কিয়েলিনি চিৎকার করে রেফারির দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন। জানিয়েছেন, সুয়ারেজ তাঁর কাঁধে কামড় বসিয়েছেন। সারা দুনিয়ার প্রায় সব গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করেছে সুয়ারেজের এই কামড়-কাণ্ড। কিন্তু উরুগুয়ের গণমাধ্যম পুরো ব্যাপারটি নিয়ে ছিল আশ্চর্যরকম নির্লিপ্ত। যেন কিছুই হয়নি। উরুগুইয়ান পত্রপত্রিকাগুলো একটি শব্দও খরচ করেনি তাদের দেশের সেরা তারকার এই অপকর্ম সম্পর্কে! উল্টো দেশটির একটি টিভি চ্যানেল দাবি করেছে, সুয়ারেজ হচ্ছেন ঘটনার স্বীকার। পুরো ব্যাপারটিই নাকি ‘কারসাজি’, ‘সাজানো’।
উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের দাবিও একই রকম। তাদের বক্তব্য, কিয়েলিনির কাঁধে কামড় দেওয়াার দাগটি ফটোশপে বানিয়েই নাকি সারা দুনিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। তাদের বক্তব্যের পক্ষে সব যুক্তিই প্রমাণ হিসেবে ফিফার কাছে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক আলেসান্দ্রো বালবির ভাষ্য, ‘সুয়ারেজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। ঘটনাটা যে সাজানো ছিল, তা প্রমাণ করে ছাড়ব আমরা।’ পুরো বিষয়টি নিজেদের সেরা খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন তাঁরা, ‘কোনো সন্দেহ নেই দুটি কারণে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। প্রথমত, ব্যক্তি সুয়ারেজ। দ্বিতীয়ত, ইতালি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে।’
উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তো আরেক কাঠি সরেস। তাঁর কথা, ‘আমরা সুয়ারেজকে একজন দার্শনিক, যন্ত্র বা ভালো আচরণের মানুষ হিসেবে দলে নিইনি। সে অসাধারণ খেলোয়াড়। আমি তাঁকে কাউকে কামড় দিতে দেখিনি।’
সুয়ারেজের কামড়-কাণ্ড মাঠের রেফারির দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। তবে দষ্টি এড়ায়নি ফিফার শীর্ষ কর্মকর্তাদের। ফিফার নির্বাহী কমিটির সদস্য জিম বয়েসের কথায়ও সেটা স্পষ্ট, ‘ঘটনাটা টেলিভিশনে বেশ কয়েকবার দেখেছি আমি। কোনো সন্দেহ নেই, সুয়ারেজ দারুণ একজন খেলোয়াড়। কিন্তু আবারও তিনি সমালোচনার দুয়ার খুলে দিলেন। ফিফা অবশ্যই বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
সারা বিশ্ব যেখানে সুয়ারেজের কামড় দেওয়ার দৃশ্যটা সরাসরি দেখেছে, সেটা কীভাবে উরুগুয়ে মিথ্যা প্রমাণ করবে, তা বিস্ময়করই বটে! সূত্র: রয়টার্স।