আমি বাড়াবাড়িতে অভ্যস্ত নই। বাড়াবাড়ির আশপাশ দিয়েও হাঁটতে চাই না। হুম। আমি খেলা দেখি। তবে রাত ১০টার খেলাটা দেখি নিয়মিত। আর ৪টার খেলা একটাও দেখিনি। কারণ আমার কাছে ওই ভিনদেশের খেলার চেয়ে নিজের ঘুমটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। একটু স্বার্থপরের মতোই বলি, এ টুর্নামেন্টে যদি আমার দেশ থাকতো তাহলে অবশ্যই আমি আমার দেশটাকে সাপোর্ট করতাম এবং সব খেলা দেখতাম শুটিং-ঘুম বাতিল করে। এখন তো আমাদের পুরো জাতির অবস্থা হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো। সবাই যেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত! ডানে-বামে তাকানো যায় না ভিনদেশী পতাকার জন্য। প্রতিনিয়ত একে অপরে দু-কুমড়া আচরণ করছেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কিংবা নেইমার-মেসি নিয়ে। অথচ এ চিত্র আমাদের শাকিব-আশরাফুল-তামিম-মাশরাফিদের নিয়ে দেখি না। এ বিশ্বকাপের সময় আমরা যে পরিমাণ বিদেশী পতাকা নিজের বাড়ির ছাদে অথবা গাড়িতে উড়াই, সারা বছরেও সেই পরিমাণ নিজ দেশের পতাকা উড়াই না। এটা খুব বেদনায় ফেলে দেয় আমাকে। এ এক বিচিত্র দেশ, বিচিত্র জাতি আমরা। যাই হোক, বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে আসি। আমি বরাবরই ম্যাচ অনুযায়ী দল সাপোর্ট করি। আমার প্রথম পছন্দ এশিয়ান দল। যেমন জাপান, কোরিয়া ও ইরান। এবার তো ইরান ভালই চমক দেখালো। যাই হোক, এশিয়ান দলে পর আমার দ্বিতীয় বিবেচনা হলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল। শুধু খেলা নয়, সব কিছুতেই আমি দুর্বলের পাশে থাকতে চাই। এটা আমার মানসিক দুর্বলতা বলতে পারেন। যেমন গতরাতে (বুধবার) শেষ খেলা দেখলাম আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার। আমি নাইজেরিয়াকে সাপোর্ট করেছি। ওরা দুর্দান্ত খেলেছে। হেরেছে। তাতে কষ্ট নেই। তবে ওরা ফাইট দিয়েছে শেষ পর্যন্ত। আশপাশে দেখি মেসি আর নেইমারের ক্যারিশমা নিয়ে মারামারি করে যাচ্ছে সবাই। আমি কোন ব্যক্তি তারকাকে সাপোর্ট করতে চাই না। সাপোর্ট হবে দেশ কিংবা টিম ধরে। ব্যক্তি এখানে মুখ্য হবে কেন? তাই আমার কাছে মেসি-মূসার পার্থক্য নেই। শেষ ম্যাচে মেসি দুই গোল। মূসাও দুই গোল। ফলে আপনি মূসাকে খাটো করে দেখবেন কোন অযুহাতে? সব মিলিয়ে শনিবার থেকে নকআউট রাউন্ডের খেলা শুরু হচ্ছে। চেষ্টা করবো প্রতিটি ম্যাচ না দেখলেও খোঁজখবর রাখতে। তবে ফাইনালে ব্রাজিল-জার্মান খেললে হয়তো আমার ভোট যাবে ব্রাজিলের দিকে। শুধু এটুকু বলতে পারি। তবে আমি অপেক্ষায় আছি ছোট দলগুলো থেকে বড় কোন অঘটনের জন্য।