শর্ত শুধু একটাই- ছবিটা সহ্য করার মানসিক ক্ষমতা থাকতে হবে।
পেটের ক্ষিদে মেটানোর জন্য যে মেয়েরা অন্যের খাদ্য হয়, তাদের জীবনযাপনের বাস্তবতা কীরকম হতে পারে, তা নিয়ে আমাদের প্রায় সবারই একটা আলগা বা বিশদ ধারণা আছে। খবরের কাগজ, নানান ভিডিও ফুটেজ, খবরের চ্যানেল- সেই বাস্তবতার কিছুটা আমাদের জানিয়ে রাখে। কিন্তু জেনে রাখা আর চোখের সামনে দেখা- এই দুটো ব্যাপারের মধ্যে তো কিছুটা তফাত আছেই। দ্বিতীয়টা অনেক বেশি ভয়ানক, অনেক বেশি গা-শিউরানো! কোনও কোনও ক্ষেত্রে, পড়তে খুব খারাপ লাগলেও, গা-ঘিনঘিনে! একটা সময়ের পরে চোখের সামনে ভায়োলেন্স দেখতে দেখতে এমনটাই হয়। সেই জন্যই আগাম সজাগ করে দেওয়া ভাল- দর্শক, আপনি যদি খুব নরম মনের হন, যদি ছিটেফোঁটা ভায়োলেন্স দেখাও আপনার মানসিক অশান্তির কারণ হয়, তবে নাগেশ কুকুনুর-এর ‘লক্ষ্মী’ ছবিটা দেখতে যাবেন না। আর যদি জানতে চান, ভারতের আনাচে-কানাচে কীভাবে নাবালিকা-পাচার চলছে, কীভাবে সেই মেয়েদের কাজে লাগানো হচ্ছে, কেমনভাবে তারা বেঁচে আছে হররোজ শারীরিক-মানসিক নির্যাতন সহ্য করে, তবে ‘লক্ষ্মী’-র চেয়ে ভাল অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টেশন আমার মতে আর নেই। অন্তত, বলিউডের ছবিতে নেই।
নাগেশের ছবির মজাই এই, সেখানে বার বার তাঁর জন্মস্থান হায়দরাবাদ ঘুরে-ফিরে আসে। তবে এই প্রথম ‘লক্ষ্মী’-তে হায়দরাবাদ তার অন্ধকার দিকটা নিয়ে এল। যৌন ব্যবসাটা কিন্তু অন্ধকার দিকের পুরোটা নয়। কেননা, এই ছবি হায়দরাবাদের প্রসিদ্ধ স্বীকৃত যৌনপল্লি ‘মেহবুব কি মেহন্দি’-কে ঘিরে নয়। সেখানেও মেয়েরা অনিচ্ছেতেই কাজ করে, তবে একটা সরকারি নজরদারি আছে জায়গাটার ওপর। কিন্তু ‘লক্ষ্মী’ ছবির ‘ধর্ম বিলাস গার্লস্ হস্টেল’ তো তা নয়। বরং হায়দরাবাদের গলি-ঘুঁজিতে কীভাবে নাবালিকা-পাচার চলে, গার্লস্ হস্টেলের নামে কীভাবে চলে যৌন ব্যবসা- সেই ট্র্যাফিকিংয়ের কিস্যাটাই ছবিতে বলতে চেয়েছেন নাগেশ।
আর দেখিয়েও দিয়েছেন, কীভাবে সেলুলয়েডের রুপোলি মায়া-শরীরে বাস্তবতার আঘাতের দাগ বুনতে হয়। ছবিতে খোদ পরিচালক-অভিনীত চরিত্র চিন্না যেমন কোমল নারীশরীরে পেরেক-দেওয়া কাঠের বাটাম ফুটিয়ে দেয়, ঠিক তেমন করেই। যদিও এরকম সরাসরিভাবে ভায়োলেন্স ছবিতে এসেছে খুব সামান্যই। কিন্তু সেটাকে কেন্দ্র করে ছবির শুরু থেকে প্রায় শেষ পর্যন্ত একটা ভয় দর্শকের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন তিনি। সেই আশঙ্কা আছে ছবির সংলাপে, আর আছে সিনেম্যাটিক ট্রিটমেন্টে। খুব তুখোড়ভাবে সেই অস্বস্তি দর্শকের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন দুঁদে অভিনেতারাও। সেই জন্যই ছবিটা এত অন্ধকারের।
ছবিটা চূড়ান্ত বাস্তববাদী নায়িকার নামের জন্যও। লক্ষ্মী- সে দেবীই হোক বা মানবী, পুরুষশাসিত সমাজে দুজনেই যে আদতে ব্যবসার সঙ্গেই জড়িয়ে, সেটাও চমৎকারভাবে ছবিতে প্রমাণ করে দিয়েছেন নাগেশ। এমনকী, তাঁর নায়িকাও দেবীটির মতোই চঞ্চলা। বার বার সে পালিয়ে যায় ‘ধর্ম বিলাস গার্লস্ হস্টেল’ থেকে। সবার শেষে, এই লক্ষ্মীও আঁকড়ে ধরে সত্যের রাস্তা। মনে তো হয় না, মোনালি ঠাকুর ছাড়া আর কেউ চরিত্রটিকে এত জীবন্ত করে তুলতে পারতেন! মাত্র চোদ্দ বছরের নাবালিকার অসহায়তা, লজ্জা, জেদ, যন্ত্রণা- সব কিছু নিয়েই মোনালি আমাদের অনেকগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন। আর আমাদের অপরাধবোধে মুখ নিচু করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
পেটের ক্ষিদে মেটানোর জন্য যে মেয়েরা অন্যের খাদ্য হয়, তাদের জীবনযাপনের বাস্তবতা কীরকম হতে পারে, তা নিয়ে আমাদের প্রায় সবারই একটা আলগা বা বিশদ ধারণা আছে। খবরের কাগজ, নানান ভিডিও ফুটেজ, খবরের চ্যানেল- সেই বাস্তবতার কিছুটা আমাদের জানিয়ে রাখে। কিন্তু জেনে রাখা আর চোখের সামনে দেখা- এই দুটো ব্যাপারের মধ্যে তো কিছুটা তফাত আছেই। দ্বিতীয়টা অনেক বেশি ভয়ানক, অনেক বেশি গা-শিউরানো! কোনও কোনও ক্ষেত্রে, পড়তে খুব খারাপ লাগলেও, গা-ঘিনঘিনে! একটা সময়ের পরে চোখের সামনে ভায়োলেন্স দেখতে দেখতে এমনটাই হয়। সেই জন্যই আগাম সজাগ করে দেওয়া ভাল- দর্শক, আপনি যদি খুব নরম মনের হন, যদি ছিটেফোঁটা ভায়োলেন্স দেখাও আপনার মানসিক অশান্তির কারণ হয়, তবে নাগেশ কুকুনুর-এর ‘লক্ষ্মী’ ছবিটা দেখতে যাবেন না। আর যদি জানতে চান, ভারতের আনাচে-কানাচে কীভাবে নাবালিকা-পাচার চলছে, কীভাবে সেই মেয়েদের কাজে লাগানো হচ্ছে, কেমনভাবে তারা বেঁচে আছে হররোজ শারীরিক-মানসিক নির্যাতন সহ্য করে, তবে ‘লক্ষ্মী’-র চেয়ে ভাল অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টেশন আমার মতে আর নেই। অন্তত, বলিউডের ছবিতে নেই।
নাগেশের ছবির মজাই এই, সেখানে বার বার তাঁর জন্মস্থান হায়দরাবাদ ঘুরে-ফিরে আসে। তবে এই প্রথম ‘লক্ষ্মী’-তে হায়দরাবাদ তার অন্ধকার দিকটা নিয়ে এল। যৌন ব্যবসাটা কিন্তু অন্ধকার দিকের পুরোটা নয়। কেননা, এই ছবি হায়দরাবাদের প্রসিদ্ধ স্বীকৃত যৌনপল্লি ‘মেহবুব কি মেহন্দি’-কে ঘিরে নয়। সেখানেও মেয়েরা অনিচ্ছেতেই কাজ করে, তবে একটা সরকারি নজরদারি আছে জায়গাটার ওপর। কিন্তু ‘লক্ষ্মী’ ছবির ‘ধর্ম বিলাস গার্লস্ হস্টেল’ তো তা নয়। বরং হায়দরাবাদের গলি-ঘুঁজিতে কীভাবে নাবালিকা-পাচার চলে, গার্লস্ হস্টেলের নামে কীভাবে চলে যৌন ব্যবসা- সেই ট্র্যাফিকিংয়ের কিস্যাটাই ছবিতে বলতে চেয়েছেন নাগেশ।
আর দেখিয়েও দিয়েছেন, কীভাবে সেলুলয়েডের রুপোলি মায়া-শরীরে বাস্তবতার আঘাতের দাগ বুনতে হয়। ছবিতে খোদ পরিচালক-অভিনীত চরিত্র চিন্না যেমন কোমল নারীশরীরে পেরেক-দেওয়া কাঠের বাটাম ফুটিয়ে দেয়, ঠিক তেমন করেই। যদিও এরকম সরাসরিভাবে ভায়োলেন্স ছবিতে এসেছে খুব সামান্যই। কিন্তু সেটাকে কেন্দ্র করে ছবির শুরু থেকে প্রায় শেষ পর্যন্ত একটা ভয় দর্শকের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন তিনি। সেই আশঙ্কা আছে ছবির সংলাপে, আর আছে সিনেম্যাটিক ট্রিটমেন্টে। খুব তুখোড়ভাবে সেই অস্বস্তি দর্শকের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন দুঁদে অভিনেতারাও। সেই জন্যই ছবিটা এত অন্ধকারের।
ছবিটা চূড়ান্ত বাস্তববাদী নায়িকার নামের জন্যও। লক্ষ্মী- সে দেবীই হোক বা মানবী, পুরুষশাসিত সমাজে দুজনেই যে আদতে ব্যবসার সঙ্গেই জড়িয়ে, সেটাও চমৎকারভাবে ছবিতে প্রমাণ করে দিয়েছেন নাগেশ। এমনকী, তাঁর নায়িকাও দেবীটির মতোই চঞ্চলা। বার বার সে পালিয়ে যায় ‘ধর্ম বিলাস গার্লস্ হস্টেল’ থেকে। সবার শেষে, এই লক্ষ্মীও আঁকড়ে ধরে সত্যের রাস্তা। মনে তো হয় না, মোনালি ঠাকুর ছাড়া আর কেউ চরিত্রটিকে এত জীবন্ত করে তুলতে পারতেন! মাত্র চোদ্দ বছরের নাবালিকার অসহায়তা, লজ্জা, জেদ, যন্ত্রণা- সব কিছু নিয়েই মোনালি আমাদের অনেকগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন। আর আমাদের অপরাধবোধে মুখ নিচু করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।