‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত’ করলেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক হুলিও সিজার। খলনায়ক থেকে এখন নায়ক তিনি। ২০১০-এর দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে খলনায়কে পরিণত হয়েছিলেন সিজার। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্রাজিল হেরেছিল তার ভুলে। ব্রাজিলের প্রথম গোলটি হজমে এখনও তাকে দায়ী করা হয়। সেই যন্ত্রণা তাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল এতদিন। যন্ত্রণা মোচন করার দারুণ সুযোগ পেলেন এ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে চিলির বিপক্ষে। ম্যাচ গড়ালো টাইব্রেকারে। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা নির্ভর করছে তখন দুই গোলরক্ষকের নৈপুণ্যের ওপর। টাইব্রেকারের লটারির আগে সিজার কাঁদলেন। কাঁদলেন পরেও। তবে দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল। টাইব্রেকার শট নেয়ার আগে নাকি তিনি অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাকে বলেছিলেন- আজ আমিই ম্যাচের নায়ক হবো। কমপক্ষে তিনটি শট রুখে দেয়ার প্রত্যয়ও নাকি তখন তিনি সিলভার সামনে দেখিয়েছিলেন। সত্যি সত্যিই ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলে নায়ক হয়ে গেলেন কুইন্স পার্ক রঞ্জার্সের এই ব্রাজিলীয় গোলরক্ষক। কথামতো তিনটি না পারলেও প্রতিপক্ষের দু’টি শট রুখে দেন তিনি। এতে ব্রাজিল ৩-২ গোলে জিতে মুখ রাখতে সক্ষম হয়েছে। সিজারের টাইব্রেকার শট ঠেকানোর গুণ বেশ পুরনো। তবে এদিন তিনি যা করলেন তা এক কথায় অসাধারণ। এমন দারুণ নৈপুণ্যের প্রতিদানস্বরূপ ম্যাচসেরার স্বীকৃতিটাও পেয়েছেন সিজার। ম্যাচ শেষে টেলিভিশনের সামনে কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। চোখ ভরে উঠেছিল পানিতে। ঠোঁট কামড়ে কান্না নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা করে সাংবাদিকদের নিজের মনের কথা জানালেন। বলেন, ‘২০১০ এর ঘটনার পরও ব্রাজিলিয়ান সমর্থকরা আমার জন্য চিৎকার করে গেছে। আমাকে নিয়ে তারা আশা করেছে। ২০১০-এর ঘটনার পর আমি খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের কাছেও ব্যাপারটি ছিল খুবই দুঃখের। আমি এতদিন অনুতপ্ত হয়ে সে ব্যাপারে কোন কথা বলিনি। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আমার মা-বাবা আমাকে প্রেরণা দিয়ে গেছেন। তাদেরসহ ২০০ মিলিয়ন ব্রাজিলীয়র কাছে আমাকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। ব্রাজিলীয়রা হয়তো আমার কাছ থেকে এটাই আশা করেছিল। আমি অনেক খুশি। অবশেষে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে পারলাম।’