বুধবার, জুন ২৫, ২০১৪

আমাদের জাতীয় পতাকা!

222
আদি বা প্রথম পতাকাটি আজকের পতাকার মতো ছিল না আদি পতাকাটি এঁকেছিলেন স্বভাবশিল্পী ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশ এই পতাকা তৈরির জন্য কাপড় দিয়েছিলেন ঢাকা নিউমার্কেটের অ্যাপোলো টেইলার্সের মালিক বজলুর রহমান লস্কর সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান কলাভবনের সামনের পশ্চিম গেটেই বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলিত হয় বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ছাত্রনেতা আবদুর রব আমাদের সেই আদি পতাকার মাঝখানে হলুদ বৃত্তের মধ্যে ছিল বাংলাদেশের মানচিত্র
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চে তাঁর বাসভবনে, স্বাধীনতা ঘোষণার প্রাক্কালে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন
বিজয়ের পর ১৯৭২ সালে শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রং তার ব্যাখ্যা-সংবলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয় পটুয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান আমাদের জাতীয় পতাকার যে রূপ দিয়েছিলেন, সেটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত। সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি তারুণ্যের প্রতীক, বৃত্তের লাল রং উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার এই রূপটি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়
বাংলাদেশের পতাকা আয়তাকার। এর দৈর্ঘ্য প্রস্থের অনুপাত ১০: এবং মাঝের লাল বর্ণের বৃত্তটির ব্যাসার্ধ দৈর্ঘ্যের পাঁচ ভাগের এক ভাগ, পতাকার দৈর্ঘ্যের ২০ ভাগের বাঁ দিকের নয় ভাগের শেষ বিন্দুর ওপর অঙ্কিত লম্ব এবং প্রস্থের দিকে মাঝখান বরাবর অঙ্কিত সরল রেখার ছেদ বিন্দু হলো বৃত্তের কেন্দ্র
পতাকার দৈর্ঘ্য ১০ ফুট হলে প্রস্থ হবে ফুট, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ফুট, পতাকার দৈর্ঘ্যের সাড়ে ফুট ওপরে প্রস্থের মাঝ বরাবর অঙ্কিত আনুপাতিক রেখার ছেদ বিন্দু হবে লাল বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু
পতাকা ব্যবহারের মাপ
ভবনে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো ১০ ফুট বাই ফুট, ফুট বাই ফুট এবং ২৫ ফুট বাই ১৫ ফুট। মোটরগাড়িতে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো ১৫ ইঞ্চি বাই ইঞ্চি এবং ১০ ইঞ্চি বাই ইঞ্চি। আন্তর্জাতিক দ্বিপক্ষীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য টেবিল পতাকার মাপ হলো ১০ ইঞ্চি বাই ইঞ্চি
পতাকার ব্যবহারবিধি
বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকারি বেসরকারি ভবন, বাংলাদেশ কূটনৈতিক মিশন কনস্যুলেটে পতাকা উত্তোলন করতে হবে। শোক দিবসে পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। পতাকা অর্ধনমিত রাখার ক্ষেত্রে প্রথমে পতাকা শীর্ষস্থান পর্যন্ত ওঠাতে হবে। তারপর অর্ধনমিত অবস্থানে রাখতে হবে। দিনের শেষে পতাকা নামানোর সময পুনরায় শীর্ষস্থান পর্যন্ত উঠিয়ে তারপর নামাতে হবে
সরকারের অনুমতি ছাড়া জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা যাবে না। জাতীয় পতাকার ওপর কিছু লেখা অথবা মুদ্রণ করা যাবে না। এমনকি কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিছু আঁকা যাবে না

এখন আমরা পোশাকেও পতাকার আলো দেখি। অর্থাৎ আমাদের জাতীয় পতাকার রঙের ব্যবহার লক্ষ করি শাড়িতে পাঞ্জাবি আর কামিজেও। পতাকার চেতনা যে আমাদের মননে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে সে কথা আলাদা করে আর বলবার দরকার নেই। আমাদের জাতীয় পতাকার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখা মানে মহান মুক্তিযোদ্ধাদেরই সম্মান করা