বুধবার, জুন ২৫, ২০১৪

নেইমারের চ্যালেঞ্জের মুখে মেসি


আগুয়েরা, হিগুয়েন, ডি মারিয়া-রা যতই থাকুন না কেন, মেসিই টেনে নিয়ে গিয়েছেন গোটা দলকে। দুই স্ট্রাইকারের মাঝখানে খেলছেন মেসি। কোচ সাবেইয়া তাঁকে ফ্রি পজিশনে খেলাচেছন। তাঁর জন্য কোনও নির্দিষ্ট জায়গা বেঁধে দিচেছন না বলে মঙ্গলবার জন্মদিন পালন করা মেসি অনায়াসে ওঠানামা করে খেলতে পারছেন। তার চেয়েও বড় কথা কোনও প্রতিপক্ষ দল তাঁর নাগালই পাচেছ না। সেইসঙ্গে আরেকটা কাজ করছেন মেসি, রাইট উইং দিয়ে খেলাটাকে ছড়িয়ে দিচেছন। কাছে টেনে নিচেছন বিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারদের। ফলে, আগুয়েরা, হিগুয়েনদের সামনে থাকছে ফাঁকা জায়গা। তাই অনায়াসে আক্রমণে উঠে যেতে পারছে আর্জেণ্টিনা। ৪-৩-৩ ফরমেশনে দলকে খেলাচেছন সাবেইয়া। কিন্ত্ত আর্জেণ্টিনার সমস্যা হচেছ মাঝমাঠ ও ডিফেন্স। গেগো, মাসচেরানো, ডি মারিয়ারা মাঝমাঠে খেললেও দেখা যাচেছ এঁদের নড়াচড়া অনেকটা শ্লথ। ফলে, ঝোড়ো আক্রমণে উঠে আসতে পারছে না নীল-সাদা দল। গত ইরান ম্যাচে তা বার বার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আরও প্রমাণ হয়েছে প্রচুর ফাঁকফোকর  থাকা রক্ষণ। জাবালেতা, গারে, ফার্নান্ডেজ, রোজোরা এখনও পর্যন্ত রক্ষণে তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারেননি। ইরান বা বসনিয়া হয়তো সেই রক্ষণে হূল না ফোটাতে পারলেও নাইজেরিয়া কিন্ত্ত ছেড়ে কথা বলবে না। এখানেই ভয় সাবেইয়ার। স্টিফেন কেশি ঠিক করে ফেলেছেন মেসিকে আটকেই বাজি মাত করবেন। নাইজেরিয়া কোচ ভাল মতোই জানেন, আর্জেণ্টিনার একমাত্র প্রাণভোমরা হলেন মেসি। সুতরাং তাঁকে রুখে দিতে পারলেই নাইজেরিয়ার দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া সমস্যা হবে না। দুরন্ত গতিতে প্রতি আক্রমণে চলে আসেন মুসা, এমিনিকেরা। ওনাজি, ওসানিউয়া-রা যদি মাঝমাঠকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাহলে কিন্ত্ত আর্জেণ্টিনার কপালে অনেক দুঃখ আছে। এখনও পর্যন্ত দু'টি দল ছটি ম্যাচ খেলেছে। যারমধ্যে আর্জেণ্টিনাই জিতেছে চারটি। নাইজেরিয়ার জয়ের রেকর্ড মাত্র এক। সুতরাং এটাই প্রমাণ করে খাতায়-কলমে এগিয়ে  আর্জেণ্টিনা। কিন্ত্ত বাস্তবের ছবি অনেকসময়ই রুক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। কে বলতে পারে শেষ হাসি হাসবে না নাইজেরিয়া?

সম্মুখ যুদ্ধে এখনও দু'জন মুখোমুখি হননি। হলেও সেই ফাইনালে দেখা হওয়ার কথা। তবু পর্দার আড়ালেই চলে আসছে সেই মেসি বনাম নেইমারের লড়াই। কীভাবে? ফুটবল বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছেন, নেইমারকে টপকে মেসি গোলদাতা হিসাবে এগিয়ে যাবেন, নাকি ঘটবে ঠিক উল্টোটা? এখনও পর্যন্ত ব্রাজিলীয়ন সুপারস্টার তিনটা ম্যাচ খেলে চারটি গোল করেছেন। সেখানে মেসি এক ম্যাচ কম খেলে করেছেন দুটি গোল। যদি আজ নাইজেরিয়ার বিরু‌দ্ধে দু'টি গোল করে ফেলতে পারেন মেসি তাহলে দুই সুপারস্টারের ঘোড়দৌড় একই সারিতে চলতে থাকবে। আপাতত আজ রাতে এটাই আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের নির্যাস।
আর্জেণ্টিনা পরপর দু'টি ম্যাচ জিতে পৌঁছে গিয়েছে শেষ ষোলোয়। আজ নাইজেরিয়ার সঙ্গে ড্র করতে পারলেও গ্রুপ শীর্ষে থাকবেন মেসিরাই। অপরদিকে নাইজেরিয়া যদি হেরে যায় তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়ে যাবে। তাদের ঘাড়ের কাছে ফেলা ইরানের নিঃশ্বাস সেক্ষেত্রে বিষ হয়ে উঠতে পারে। যেহেতু ইরান-নাইজেরিয়া ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। তবে ইরানকে অবশ্যই হারাতে হবে বসনিয়াকে। এবং বড় ব্যবধানে। তাহলেই গোলের গড়ে নাইজেরিয়াকে টেক্কা দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছে যাবে এশিয়ার অন্যতম দল ইরান। এবারের বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জেতার রেকর্ড দেখা গিয়েছে। এক, হল্যান্ড ৫-১ গোলে হারিয়েছিল স্পেনকে। দুই, জার্মানি হারিয়েছিল পর্তুগালকে। তিন, সুইজারল্যান্ড ৪-০ গোলে হেরেছিল ফ্রান্সের কাছে। সুতরাং কে বলতে পারে ইরান আজ বড় ব্যবধানে হারাতে পারবে না বসনিয়াকে?