শনিবার, জুলাই ১৯, ২০১৪

আপনি কি “একতরফা” প্রেম করছেন?

কখনো কখনো নিজের অজান্তেই পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত দু’জন মানুষের একজন সম্পর্ক থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু অপরজন তুমুলভাবেই ভালোবাসায় মগ্ন থাকেন। তখন একটা হয়ে যায় একতরফা প্রেম। এক্ষেত্রে যে সম্পর্কটি ধরে রাখতে চায়, কষ্টটা তার অনেক বেশি হয়। তবে একতরফা কোনও সম্পর্ক ধরে না রাখাই ভাল। এতে দু’জনকেই কষ্ট পেতে হয়। যে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছে, দোটানায় পড়ে গিয়ে তার অবস্থাও হয় বেদনাময়। আসুন জেনে নেয়া যাক, কীভাবে বুঝবেন আপনার ভালবাসা একতরফা কিনা:
সঙ্গী আপনাকে কতোখানি সময় দিচ্ছে
সারাদিনে সঙ্গী কতোবার আপনাকে ফোন করছে? একটা সম্পর্কে দুজনের উপস্থিতিই সমানভাবে জরুরি। তার ব্যস্ততা হয়তো আপনার থেকে বেশি। তবু আপনার প্রতি মনোযোগী হলে তিনি অবশ্যই সময় বের করে আপনার খবর নেবে। সারাদিন কীভাবে কাটালেন, কখন কি করছেন বা খেয়েছেন কিনা বা আপনার মন কেমন আছে এসব টুকিটাকি কথা বলবেই। যদি এগুলো তিনি না করেন, তবে আপনি আপনাদের সম্পর্কটা একবার পুনর্বিবেচনা করুন।
চোখের আড়াল হলে যদি মনের আড়াল হয়
সঙ্গীর সঙ্গে আপনার খুব কম দেখা হয় বা অনেক সময় একেবারেই দেখা হয় না। কাছাকাছি থাকেন কি আপনারা? তাহলেও এমন কেন হয়? জানার চেষ্টা করুন। নিজের কাছে প্রশ্ন করুন প্রথমে। উত্তরে যদি এমনটা হয় যে, আপনি চাইলেও আপনার সঙ্গী দেখা করতে চায় না, বিভিন্নরকম অজুহাত দেয়, তাহলে বিষয়টি নিয়ে এবার ভাবতে শুরু করুন। যারা পরস্পরকে ভালবাসেন তাদের মধ্যে দেখা করার জন্য এক ধরনের টান থাকে যা আপনাদের সম্পর্কে নেই। সেরকম কেন হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করুন। অনেক সময় এমন হয় যে, যতক্ষণ আপনি তার সঙ্গে আছেন ততক্ষণ সে আপনার প্রতি দুর্বল, এর পরবর্তী সময়ই সে ধীরে ধীরে আপনাকে উপেক্ষা করছে বা এড়িয়ে চলছে। কারণটা খুঁজে বার করার চেষ্টা করুন।
একে অপরের সঙ্গে কতো সময় কাটান
ভালবাসার টান থাকলে কথা কোনও দিন ফুরাবে না। সারাদিন কথা বললেও মনে হতে পারে যে আপনাদের কথা ফুরোয়নি। এখনও আরও অনেক কথা বলা বাকি আছে। অনেকদিনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে হয়তো কিছু বলার মতো নতুন কথা ফুরিয়ে যায়। সেক্ষেত্রেও দেখা যায় অনেক সময় নীরব থেকেও একে অপরের সান্নিধ্য ভালবাসে। তবে কথা বলা বা একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোও কমিয়ে দিলে তা চিন্তার বিষয়। যারা পরস্পরকে ভালবাসেন তাদের মধ্যে কথা বলার জন্য কোনও ঘটনার প্রয়োজন হয় না। তারা সারাদিনে কী কী করলেন তা নিয়েই গল্প করে সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। একটু দেখে নিন আপনার সঙ্গীটি কী এরকম মুহূর্তও আপনার সঙ্গে কাটাতে চাইছে না? আপনি নিজে থেকে যোগাযোগ করে তাকে প্রশ্ন না করার আগ পর্যন্ত তিনি কী কিছুই বলেন না, কিংবা আপনার সম্পর্কেও জানতে চান না? তাহলে অবশ্যই আপনি একটি একতরফা সম্পর্কের মধ্যে আছেন।
তার জীবনে আপনার প্রাধান্য কতোটা: আপনার সঙ্গীর কাছে আপনার স্থানটা কোথায়। অর্থাৎ কতটা প্রাধান্য দেয় আপনাকে? বন্ধু, পরিবার বা অন্য কোনও মানুষের সঙ্গে সময় কাটানোটা তার কাছে বেশি জরুরি, নাকি আপনাকে সময় দেওয়াটা? কোনটা? একজন মানুষের কাছে পরিবার পরিজন, ভালবাসার মানুষ এবং বন্ধুবান্ধবের জন্য আলাদা স্থান রয়েছে। অনেকে বলতে পারেন কিছুদিনের ভালবাসার মানুষের জন্য বন্ধুবান্ধব ছাড়া যায় না। কিন্তু এখানে বন্ধুবান্ধব ছেড়ে দেওয়ার কথা হচ্ছে না। কথা হচ্ছে মূল্যায়নের। আপনাকে যিনি ভালবাসেন তিনি স্বভাবতই আপনার কাছে সময় চাইবেন এবং এটাও চাইবেন আপনি তাকে আর দশজনের চাইতে বেশি প্রাধান্য দিন। এতে দোষের কিছুই নেই। আপনার প্রেমিক/প্রেমিকা আপনার বন্ধুবান্ধব ছাড়তে বলছেন না, শুধু তার কথার প্রাধান্য একটু বেশি দিতে বলছেন। যদি আপনার প্রেমিক বা প্রেমিকা আপনাকে তার বন্ধু বান্ধবের চাইতেও কম প্রাধান্য দিয়ে থাকেন তবে এটি একটি লক্ষণ।
সবশেষে বলা যেতে পারে, দু’জনের একজন যদি সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে না চান, তাহলে সম্পর্কে তৎক্ষণাৎ ইতি টানুন। রাবারের মতো টেনে সেটাকে বাড়াবেন না। কাউকে আপনার দুর্বলতার সুযোগ নিতে দেবেন না। পিছন ফিরে না তাকিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলুন আরও অনেক ভাল কিছু আপনার জন্য অপেক্ষা করে আছে।