শনিবার, জুলাই ১৯, ২০১৪

আল্লাহর ওয়াস্তে মুখটা বন্ধ রাখবেন- হাসানুল হক ইনু

খালেদা জিয়াকে জঙ্গিবাদীদের সঙ্গে ‘দহরম মহরম’ না করতে পরামর্শ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, খালেদাকে সেই পরামর্শ দিতে না পারলে বার্নিকাট যেন ‘আল্লাহর ওয়াস্তে’ তাঁর ‘মুখ বন্ধ’ রাখেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কুষ্টিয়া শাখার ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব বলেন।

নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন রাষ্ট্রদূত মহোদয় আমাদের আবার নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়েছেন। পরামর্শ দেওয়ার আগে আপনি (রাষ্ট্রদূত) বেগম খালেদা জিয়াকে জঙ্গিবাদ, জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে দহরম মহরম না করার পরামর্শ দেন। যদি পরামর্শ না দিতে পারেন, তাহলে আল্লাহর ওয়াস্তে মুখটা বন্ধ রাখবেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার জন্যে মার্কিন সরকার আপনাকে (রাষ্ট্রদূত) এখানে (বাংলাদেশে) পাঠায়নি।’

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ইফতেখার মাহমুদ, কুষ্টিয়া বিএমের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রতন, পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ ও চিকিত্সকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের জবাবে বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচন সংবিধান ও আইনসম্মত। আর নির্বাচনে কেউ না আসলে নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়, এ কথাটা আমরা মানি না।’
মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির সম্মুখে বলেন, ‘বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচন নিঃসন্দেহে ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে অংশগ্রহণ করা দরকার, যা আরও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের দিকে এগিয়ে যাবে।’ গতকাল ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে যারা মাথা ঘামাচ্ছেন তাদের উদ্দেশে বলব, দুদিন আগে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে নাশকতা অন্তর্ঘাতের তাণ্ডব চলেছিল, সেই সময় এইসব কূটনীতিক এবং বুদ্ধিজীবীরা কোথায় ছিলেন?’
ইনু কূটনীতিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশে সেই সব তাণ্ডব সৃষ্টিকারী জামায়াতি গুন্ডা, হেফাজতি গুন্ডা এবং তাদের পৃষ্ঠপোষক খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের বন্ধু নয়। তাঁরা (কূটনীতিক) নির্বাচনের পরামর্শ দেওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়াকে জামায়াত-হেফাজত অন্তর্ঘাত নাশকতা ত্যাগ করার পরামর্শ দেবেন। সেটাই হচ্ছে মঙ্গলজনক। এটা যদি না দিতে পারেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া আমরাই রক্ষা করব। এ ব্যাপারে তাঁদের (কূটনীতিকদের) কোনো সহযোগিতা দরকার নাই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো দমনপীড়ন কার্যকলাপ চালাচ্ছে না। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউ চলন্ত বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের সঙ্গে জড়িত, আবার কেউ চলন্ত ট্রেনে ঘুমন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার সঙ্গে জড়িত, অসংখ্য জায়গায় বোমাবাজির সঙ্গে জড়িত এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং আন্দোলনের নামে যারা সন্ত্রাস, দলবাজি, জঙ্গিবাজি তত্পরতা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেই অভিযান চলছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। যারা শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমিতি করে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নাই।