শনিবার, জুলাই ০৫, ২০১৪

লাইফস্টাইলের প্রভাবক যখন সন্তান!

একটা সন্তানের জন্য মানুষ কত কি না করে? সব সুখ-আহ্লাদ বাদ দিয়ে ওকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চায়। পরিবারে নতুন অতিথি এলে আপনার মধ্যে পরিবর্তন আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে পরিবর্তনটা ঠিক কেমন হতে পারে? কেউ আবার পাল্টা প্রশ্ন করতে পারে, পরিবর্তন হবে না কোন জিনিসটা? সবই তো বদলের খাতায়। এমন পাল্টা প্রশ্নের যুক্তি আছে। কারণ ছোট্ট শিশুটা আপনার একটা, দুইটা অভ্যাস না বরং পুরো লাইফটাই বদলে দিতে পারে। সন্তান নেওয়ার পর মানুষের জীবনযাপনের এমন কিছু পরিবর্তন ধরা পড়েছে বাংলা ট্রিবিউন লাইফস্টাইলের অনুসন্ধানী চোখে। নিজের সাথে এবার [img]http://www.banglatribune.com/wp-content/uploads/2014/06/images9.jpgমিলিয়ে দেখুন এই সবগুলোর মধ্যে কোনটি আপনি করছেন!

০১. গোলাপের ঘ্রাণ নেওয়া বন্ধ করবেন। কারণ এর চেয়ে অনেক দামি উপহার এখন আপনার হাতে। নিজের বাহুতে প্রিয়তম সন্তান।

০২. এক সময় নিজেকে ভয়ের ঊর্ধে একজন সাহসী মানুষ মনে করতেন। কিন্তু আপনি অনেকটাই ভীতু স্বভাবের। এই বুঝি ওর ঠাণ্ডা লেগে গেলো!

০৩. সন্তানের জন্য ঠিক যতটা স্যাক্রিফাইস করবেন ভেবেছিলেন তার চেয়েও বেশি করছেন।

০৪. ওর জন্য নিজের শরীরেরও যত্ন নিতে হয়! মায়ের শরীর খারাপ মানে তো বাচ্চারও।

০৫. মা-বাবারা আসলে বড্ড সেকেলে। জেনারেশন গ্যাপ বুঝে না। এখনকার ছেলেমেয়েরা কত আপডেটেড- এতদিন মাথায় পুষে রাখা এই ধরনের চিন্তাভাবনাকে গুডবাই। নতুন উপলব্ধিটা হতে পারে এ রকম, মা-বাবাকে অনেক ভালোবাসি। অনেক বেশি। হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা তোমাদের জন্য। কত কি করেছ আমার জন্য! এতদিন বুঝি নাই।

০৬. নিজের ব্যাপক মাত্রার ব্যাথার চেয়ে সন্তানের সামান্য ব্যাথাও অনেক বেশি কষ্টের।

০৭. অনেক প্রিয় মানুষের সান্নিধ্য মিস করছেন খুব? ব্যাপার না। কলিজার টুকরোটাকে ছেড়ে অত গালগল্পের সময় কোথায়!parents-children

০৮. আমি তো আগে এতটা উদার মনের ছিলাম না? হঠাৎ মনে হচ্ছে, কলিজাটা বুঝি বেশ প্রশস্ত হয়ে গেলো! আগে যেটা কখনো করিনি ওর জন্য এখন সেটাও অবলীলায় হাসিমুখে করতে পারি।

০৯. সামনেই তো বাচ্চাটা। বেশ ভালোই আছে। আনমনে খেলনা নিয়ে ব্যস্ত। তারপরও এতবার মনে পড়তে হবে?

১০. হ্যালো, বাবা! তোমার নাতি তো আজ প্রথম মা বলেছে! ইদানিং অনেক দুষ্টু হয়েছে। বাবার কোল থেকে তো নামতেই চায় না।
ঋহানের সাথে বাবা টুটুল চৌধুরী

ঋহানের সাথে বাবা টুটুল চৌধুরী

১১. এর কয়দিন পর প্রথম বাবা বলবে, তারপর মামা, চাচা, খালা, ফুপু সবই বলবে। শুধু বলবে না। নিত্যনতুন নানা কসরতও রপ্ত করবে। তার মানে প্রত্যেকটা দিনই মা-বাবার জন্য এক একটা সারপ্রাইজ ডে।

১২. হঠাৎ করেই চিৎকার দিলেন! তাতো বটেই! দেওয়ারই তো কথা। এতদিন আধো আধো কথা বলা বাচ্চাটা তো হঠাৎই একটা পুরো বাক্য বলে ফেলল!

১৩. আয়নায় মানুষ কাকে দেখে? নিজেকে? সেটা সব সময় না। আয়নাতে তাকিয়ে দেখতে হয় ওর লুকটা কেমন দেখায় ওখানে।

১৪. দুপুর ১২টায় ঘুম থেকে উঠার পুরনো অভ্যাস? নো টেনশন। সূর্য মামার আগেই উঠে যাবেন। এজন্য কেউ জাগিয়ে দিতে হবে না।

১৫. এতো ভালোবাসা ছিল কোথায় এতদিন? এতো দেখি সন্তানের জন্য অতি মানবিক প্রেম।

১৬. শুনে যাও, তোমার ছেলে একটা দাঁত দিয়েই কত স্পষ্ট করে আম্মু বলে। ওরে আমার বাবাটা। কত্ত সুন্দর একটা ছেলে।

১৭. চূড়ান্তভাবে বুঝতে শিখলেন, সত্যিকারের আনন্দ বস্তুগত সম্পদ থেকে আসে না।

১৮. আপনি এখন জানেন সূর্যের বসবাস ঠিক কোন জায়গাটাতে। মাঝে মধ্যে দ্বিধায় পড়ে যান, ফুটফুটে বাচ্চাটা আপনার আকাশে চাঁদ নাকি সূর্য? একটা সিদ্ধান্ত তো নেওয়াই যায়। ও আমার আকাশে চাঁদ, সূর্য দুটোই।

১৯. একটা তিন চাকার সাইকেল কিনেই ফেললেন? এখনও সাইকেলের চাকার নাগাল পাচ্ছে না। তাতে কি? শিখতে হবে না? আস্তে আস্তে তো বড় হচ্ছে।

২০. চকলেট, ললিপপেরও এত ক্ষমতা! ওটা পেলে চন্দ্র-সূর্যও বশে আসে?

২১. রাজপুত্রের চোখে ঘুম না আসা পর্যন্ত আপনারও ঘুম নেই। হোক না সাত সকালে অফিস।

২২. মেয়েটা এত চুপচাপ কেন? দুই মিনিট ধরে কথাই বলছে না! ও আসলে অনেক ভদ্র আর মেধাবী।

958bd_parents_text_Parents_Children২৩. বিত্তেই সুখ নয়। ওই সুন্দর হাসিটার আড়ালেই দুনিয়ার সব সুখ।

২৪. ও অনেক ক্রিয়েটিভ হবে। এখন থেকেই বুঝা যাচ্ছে।

২৫. ঘড়ি দেখে শিডিউল ঠিক করার দিন শেষ। আপনার ছোট্ট শিশুই এখন ঠিক করে দেবে আপনার নিত্যকার শিডিউল।

২৬. আমার জিনিসপত্র যেন কেউ না ধরে। এটা প্রচণ্ড বিরক্তিকর। কদিন পর বসের গিফট করা ফেভারিট শার্টটা জানালা দিয়ে ফেলে দিলেও ব্যাপার না। একটা শার্ট ফেললে কি হয়! অবশ্য এর ব্যতিক্রমও আছে।

২৭. ওকে কোলে নিয়ে চুমু দেওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম!

২৮. ছেলেটা শুধু ঝর্ণায় গোসল করতে চায়। অসুবিধা কি? করুক না। ছোট্ট মানুষ। ওর সাধ আহ্লাদই বা কতটুকু? শুধু শরীর খারাপ না করলেই হয়।

২৯. কদিন আগে পৃথিবীর আলো দেখা শিশুটার জন্য বাকি সব তুচ্ছ করতেও দ্বিধা নেই।

৩০. পৃথিবীটাকে আরো বেশি বসবাস উপযোগী করা দরকার। নতুন প্রজন্মের শারীরিক-মানসিক বিকাশের প্রয়োজন আছে।

৩১. ভার্সিটিতে বহু সুন্দরীতমার অফার ফিরিয়ে দিয়েছেন? আর এখন ওকে দেখলেই প্রেম উপচে পড়ে? এটা চিরন্তন।

৩২. টেলিভিশনে নিউজ চ্যানেল দেখা বাদ। ওর কার্টুন বাদ দিয়ে খবর দেখার সাধ্য কার? রিমোটই ভেঙ্গে ফেলবে।

৩৩. বাচ্চাটাকে তো নিজের দলে রাখতে হবে। এমনিতে যা মা ভক্ত হইছে না! আমার তো পাত্তাই নেই।

৩৪. আপনার রাজত্ব ঘনিয়ে এসেছে। ঘরের কিছুই এখন আপনার একার নয়। ও হামলে পড়ে সর্বত্র। কখন যে কি দখলে নেয় সেটারও কোনো ঠিক নেই। কি আর করা! শেয়ারিং শিখুন।


৩৫. জীবনটা অনেক সুন্দর। আল্লাহকে ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা বাচ্চা দিয়ে আমার জীবনটাকে ধন্য করার জন্য।

৩৬. ওকে নিয়েই এত ব্যস্ত থাকতে হয়, নিজের যত্ন নেওয়ার সময় কোথায়?