মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০১৪

আমাদের আলমগীর ভাতিজা মীরজাফরের চেহারা খোঁজেন-বাবলু

জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জাতীয় পার্টির ঘরের ছেলে ও ‘ভাতিজা’ বলে সম্বোধন করেছেন। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতির সমালোচনা করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলেন, ‘এরশাদ বিভিন্ন কূটচালে রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতা-শ্রমিকনেতাসহ অনেককেই কিনতে চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েকজনকে ছাড়া এরশাদের কেনা-বেচার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরশাদ যেমন কেনা-বেচা করতে পারেন, ঠিক তেমনিভাবে নিজেও কেনা-বেচার পণ্য হতেও পারঙ্গম’। তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দ্বিচারিতা, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র, নির্লজ্জ মিথ্যাচার, বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও ধর্মের নামে ভণ্ডামির এক মূর্ত প্রতীক হচ্ছেন এরশাদ। পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে নানা ধরনের ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে আসীন হয়েই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কূটকৌশল শুরু করেন তিনি। আর তাঁর এই কূটকৌশলেই প্রাণ হারাতে হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধার। তাই এরশাদ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাঁর প্রকাশ্য বিচার এবং প্রকাশ্য শাস্তি হওয়া উচিত।
আজ পাল্টা বিবৃতিতে জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির ঘরের সন্তান মির্জা আলমগীরের পিতৃনিন্দা শুনে আমি একটুও অবাক হইনি। কারণ, গোয়েবলসীয় বিএনপি রাজনীতির সাথে যুক্ত থেকে তিনি তার পিতার রাজনৈতিক পরিচয়ও ভুলে গেছেন। আর সে কারণেই তার বিবৃতিতে বলতে পেরেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাঁর কেনা-বেচার রাজনীতিতে কিছু উচ্ছিষ্ট কিনতে পেরেছেন। এ ধরনের কথা বলার আগে কি মির্জা আলমগীর তার পিতা মরহুম মির্জা রুহুল আমিনের কথা ভুলে গিয়েছিলেন? তিনি তো এরশাদ সাহেবের মন্ত্রিসভার ভূমিমন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির একজন সদস্য ছিলেন।’

বিবৃতিতে বাবলু বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যদি ক্ষমতায় আসার জন্য যড়যন্ত্র করে থাকেন, তাহলে সেই ষড়যন্ত্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ছিলেন মির্জা ফখরুলের পিতাসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তিনি আরও বলেন, ‘অপরকে মীরজাফর-উমিচাঁদ বলার আগে নিজেদের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন। কারা আছে বেগম খালেদা জিয়ার আশপাশে? এরশাদ সাহেব দল গঠন করার পর বিএনপিকে খালি করে প্রায় সব নেতা এসে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেটা যদি কেনা-বেচা হয়ে থাকে তাহলে সেই নেতাদের মধ্যে অনেকেই আবার নিজ গোয়ালে ফিরে গেছেন। তাদের মধ্যে বসেই আমাদের আলমগীর ভাতিজা মীরজাফরের চেহারা খোঁজেন। তিনি আশপাশের লোকজন নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালেই প্রকৃত মীরজাফর দেখতে পাবেন। এরশাদ সাহেবের সঙ্গে যাঁরা জুটেছিলেন তার ৯০ ভাগই ছিলেন বিএনপির সাঙ্গপাঙ্গ। এ জন্য আগেই বলেছিলাম, কাচের ঘরে বসে বাইরে ঢিল ছুঁড়বেন না।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘জিয়া হত্যার ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে রয়েছে। এটি একটি মীমাংসিত বিষয়।’
এরশাদকে হানাদার বাহিনীর দোসর বলায় আপত্তি করেছেন জিয়াউদ্দিন বাবলু। তিনি বলেন, ‘জামায়াতকে জড়িয়ে ধরে এরশাদ সাহেবকে বলেন হানাদার বাহিনীর দোসর। তিনি সে সময় সপরিবারে পাকিস্তানে আটকা পড়েছিলেন।’
জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, খালেদা জিয়ার হিসাবের খাতায় বহু হত্যা-খুনের দায় জমা হয়ে আছে। এ দেশের এতগুলো সন্তানের প্রাণ কেড়ে নেয়ার জন্য খালেদা জিয়ার প্রকাশ্য বিচার এবং তার দুই দুর্নীতিবাজ পুত্রকে দেশে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করতে হবে।