রবিবার, জুলাই ০৬, ২০১৪

বিশ্বের সব ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রিতেই অনন্তর মতো দুএকজন পাগল আছে- শাকিব খান

শীর্ষ নায়ক শাকিব খান তার প্রথম প্রযোজিত বিগ বাজেট ও অ্যারেঞ্জমেন্টের ছবি 'হিরো দ্য সুপার স্টার' নিয়ে ঈদে আসছেন। এ প্রসঙ্গে আজ তার সাক্ষাৎকার-
শীর্ষ নায়কের কাছে দর্শকের চাওয়াটা স্বাভাবিকভাবেই বেশি, সেই হিসেবে 'হিরো-দ্য সুপার স্টার', ঢালিউডের ইতিহাসে নিশ্চয়ই নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে?
হুম, এই বিষয়টি বরাবরই আমাকে ভাবায়, দর্শকের জন্য নতুন কিছু আবিষ্কারের অনুপ্রেরণা জোগায়। সেই অনুপ্রেরণায়ই একটি সমৃদ্ধ ছবি নির্মাণে আমাকে অনবরত তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। তাই দায়িত্ব নিয়েই 'হিরো দ্য সুপার স্টার' নির্মাণ করেছি। আমার বিশ্বাস, ছবিটি শুধু নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে না, ঢালিউডের ইতিহাসে মানসম্মত চলচ্চিত্রের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে মাইলফলকও স্থাপন করবে।

ঈদে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
শুধু সাড়া নয়, বলতে হয় অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি। কাকরাইলের ফিল্মপাড়ায় এলেই উত্তাপটা অাঁচ করতে পারবেন। ইতিমধ্যে দেশের বড়মাপের সব সিনেমা হল বুকড হয়ে গেছে। শতাধিক হল পেয়েছি। যা ঢালিউডের ইতিহাসে কোনো ঈদের ছবির ক্ষেত্রে এই প্রথম।


বলিউড কিংবা টলিউডে ঈদে কিন্তু বড় মাপের একটি ছবিই রিলিজ হয়, কিন্তু আমাদের দেশে উল্টোচিত্র, বিষয়টিকে কিভাবে দেখেন?
ভারতের মতো বিশাল দেশে উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি ছবি মুক্তি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে তারা ব্যবসা বোঝে এবং দর্শকের চাহিদাকে গুরুত্ব দেয়। আর আমরা মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি সিনেমা হল নিয়ে ছবি মুক্তির প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হই। এতে কোনো ছবিই ভালো ব্যবসা করতে পারে না। দর্শকও তৃপ্তি নিয়ে সব ছবি উপভোগ করতে পারে না। বলিউডের তিন খান চাইলেই উৎসবকে ঘিরে নিজ নিজ ছবি মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু তারা তা করে না। কারণ ব্যবসা এবং দর্শকের রুচি তারা বোঝে। ফলে তাদের উৎসবের ছবি ব্যবসা সফল হয় এবং সারা বছর ধরেই আলোচনায় থাকে। আমাদের এখানেও এ ব্যবস্থা জরুরি।

নির্মাণে আরও বড়মাপের কোনো প্রস্তুতির কথা ভাবছেন?
অবশ্যই, এখন থেকে বছরে দুটি ছবি প্রযোজনা করব। ছবি দুটি নিয়ে শুধু এশিয়ায় নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখব না, ইউরোপের বাজারেও প্রবেশ করব। কারণ বহির্বিশ্বে আমাদের ছবির বিশাল বাজার রয়েছে। প্রচুর বাংলাদেশি বিদেশে
বসবাস করে। তারা নিজ দেশের ছবি দেখতে চায়। বিদেশিদেরও বাংলাদেশের ছবির প্রতি আগ্রহ রয়েছে। আমরা তাদের চাওয়াকে কাজে লাগাতে পারলে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হব। ডিসেম্বরে নতুন দুই ছবির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে গেলে প্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রে বিশ্বমানের নির্মাণ প্রয়োজন-
অবশ্যই তাই। এ কথা মাথায় রেখেই 'হিরো- দ্য সুপারস্টার' এ অ্যালেক্সা ক্যামেরা থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি নৃত্য, গান , অ্যকশনসহ সবকিছুতেই বিশ্বমান বজায় রাখতে অর্থ বা অন্যকোনো ক্ষেত্রে কার্পণ্য করিনি। এফডিসির ২ নাম্বার ফ্লোরে যে সেট নির্মাণ করেছি ঢালিউডের ইতিহাসে তা বিরল। এক কথায় বিশাল যে অ্যরেঞ্জমেন্ট তা অবর্ণনীয়। কারণ চলচ্চিত্রকে ঘিরেই আমি বেড়ে উঠেছি। তাই এই শিল্প ও দর্শকের জন্য সত্যিকারের চলচ্চিত্র নির্মাণ করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। অতএব অসাধারণ ছবি হিসেবে ঈদে দর্শক উপহার পাবে-'হিরো- দ্য সুপারস্টার'। ছবিটি নিঃসন্দেহে দর্শক হৃদয়ে ঝড় তুলবে।

এম এ জলিল অনন্ত ঈদের ছবি নিয়ে আপনাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, ঈদে তার নির্মিত 'মোস্ট ওয়েলকাম টু' মুক্তি পাচ্ছে। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন_

উনিতো চ্যালেঞ্জ দেন হলিউডের টম ক্রুজকে। আর বলিউডের শাহরুখ খানকে নায়কই মনে করেন না। সেই অর্থে আমি তো তার সামনে অতি ক্ষুদ্র একজন চলচ্চিত্রকার। আসলে তার কথাবার্তা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছইু নয়। না হলে টম ক্রুজ যেখানে মিলিয়ন নয়, বিলিয়ন ডলারের ছবি নির্মাণ করেন অনন্ত সেখানে ২/৩ কোটি টাকার ছবি বানিয়ে টম ক্রুজকে প্রদিদ্ব্বন্দ্বী ভাবেন কিভাবে। বিশ্বের সব ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রিতেই অনন্তর মতো দুএকজন পাগল আছে। যাদের নিয়ে সবাই হেসে মজা পায়। আমি তার এসব হাস্যকর চ্যালেঞ্জের মধ্যে নেই।

নিজের ছবির বাইরে কাজ করা হবে?
করব, তবে বছরে মাত্র দুটি। অর্থাৎ নিজের দুটিসহ মোট চারটি। এর বেশি নয়। কারন বেশি পরিমাণে কাজ করতে গেলে কাজের মান বজায় রাখা কঠিন। মানহীন কাজ নিয়ে কোনোভাবে টিকে থাকতে চাইনা। দর্শক আমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। তাই তাদের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে নির্মাণ ও অভিনয়ে এখন আমি আরও বেশি সচেতন। ঈদে দর্শক 'হিরো দ্য সুপার স্টার' ছবির মাধ্যমে নতুন এক শাকিব খানকে খুঁজে পাবে এবং নতুন শাকিবের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
আলাউদ্দীন মাজিদ