সত্তরের দশকের মতোই বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। তিনি বলেন, তাই পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর অধিকার আদায়ে যা যা প্রয়োজন, আত্মবলিদানের মধ্য দিয়ে হলেও জনসংহতি সমিতি তা করে যাবে। গতকাল সোমবার 'সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী এবং জনবিরোধী আইন প্রণয়ন ও কার্যক্রম গ্রহণ' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। গতকাল সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে জেএসএস এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন সন্তু লারমা। তিনি বলেন, 'পার্বত্য চট্টগ্রামে মানুষের জীবনযাপন এখন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। শাসক শ্রেণি পার্বত্য চট্টগ্রামে কী করতে চায়, সেটা সম্পর্কে আমরা অবগত। এই শাসনের বিপরীতে গণতান্ত্রিক ধারায় আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। তাদের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে আমাদের অবস্থান।' এ সময় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বিপরীতে অগণতান্ত্রিক ও জনবিরোধী উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে পাহাড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সন্তু লারমা।
সন্তু লারমা বলেন, 'মানুষের মৌলিক অধিকার যখন থাকে না তখন তা প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ সব কিছুই করতে পারে। এমনকি নিজের জীবনও বলি দিতে পারে। আমি বারবার সরকারের কাছে পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। কিন্তু সরকার আমাদের মূল দাবিগুলো উপেক্ষা করে এবং ঝুলিয়ে রেখে একতরফাভাবে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন সংশোধন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন প্রণয়ন এবং রাঙামাটিতে মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এসব সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'
ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, 'পাঞ্জাবিদের শোষণ থেকে মুক্ত হতেই আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতার পর বাঙালিরাই পাঞ্জাবিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তারা এখন এ দেশের আদিবাসীদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতন করছে। ফলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম, তা ব্যাহত হয়েছে।' জেএসএসের মঙ্গল কুমার চাকমার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, জেএসএসের সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা প্রমুখ।