আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো বলিউডের অনেক তারকাই ধূমপানে আসক্ত।
তাঁদের কেউ কেউ নিজ চেষ্টায় এই আসক্তি থেকে বের হতে পারলেও, এখনও ধূমপানের
মরণজালে আটকে আছেন নামীদামি বেশ কয়েকজন তারকা।
২০১২
সালের শেষের দিকে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছিল মরণঘাতী ক্যানসার। দৃঢ়
মনোবলকে হাতিয়ার করে সঠিক চিকিত্সার মাধ্যমে ক্যানসারকে পরাস্ত করার পর আর
সিগারেট স্পশ করেননি মনীষা কৈরালা।
এমনকি
ধূমপানে আসক্ত বলিউডের অভিনেত্রীদের সংখ্যাটাও নেহাতই কম নয়। সম্প্রতি
এমন পাঁচজন অভিনেত্রীর হাঁড়ির খবর জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া। মজার বিষয়
হল, এই পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউডের অভিনেত্রী।
ধূমপান
ছাড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন সুস্মিতা সেন বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউডের
অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতা সেন ‘আই অ্যাম সি: মিস ইউনিভার্স
ইন্ডিয়া’ প্রোজেক্টসহ বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে বিভিন্ন
মহলের প্রশংসা কুড়ালেও ধূমপানে আসক্তির কারণে অত্যন্ত সমালোচিত হয়েছেন।
এই
বদ-অভ্যাসের কারণে অনেক কটুবাক্য শুনতে হয় ৩৮ বছর বয়সী এ তারকা
অভিনেত্রীকে। বহুবার জনসমক্ষে ধূমপান করতে দেখা গেছে তাঁকে। অবশ্য সুস্মিতা
দাবি করেছেন, ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। দ্রুত
তাঁর এই চেষ্টা সফল হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
দিনে
কয়েক প্যাকেট সিগারেট লাগে রানী মুখার্জির। বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউডের
আরেক তারকা অভিনেত্রী রানী মুখার্জি তাঁর অনবদ্য অভিনয় নৈপুণ্য উপহার
দিয়ে জয় করে নিয়েছেন অগণিত ভক্ত ও দর্শকের হৃদয়। কিন্তু ধূমপানের
বদ-অভ্যাস ত্যাগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হরহামেশাই অনেক তির্যক মন্তব্য হজম
করতে হয় তাঁকে। রানীর ধূমপানে আসক্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আপত্তি তাঁর
পরিবারের সদস্যদের। তাঁরা বহুবার রানীকে ধূমপান ছাড়তে বলেছেন।
অনেক
হইচইও করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কারও কথাই আমলে না নিয়ে
দিনে কয়েক প্যাকেট সিগারেট সাবাড় করে চলেছেন ৩৬ বছর বয়সী রানী। অন্তত
পরিবারের সদস্যদের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও রানী মুখার্জির ধূমপান ছেড়ে
দেওয়া উচিত। কবে তাঁর ভেতর এই বোধোদয় হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
পাকা
ধূমপায়ী কঙ্কণা সেন শর্মা বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেত্রী
এবং নির্মাতা অপর্ণা সেনের মেয়ে কঙ্কণা সেন শর্মাও অভিনয় জগতের সঙ্গে
জড়িয়েছেন। সাবলীল অভিনয়ের কল্যাণে তিনি দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন।
কিন্তু তাঁর নেতিবাচক দিক হলো তিনি একজন পাকা ধূমপায়ী। প্রচুর ধূমপান
করেন তিনি। নিজমুখে তা স্বীকারও করেছেন ৩৪ বছর বয়সী এ তারকা।
অভিনেতা
ও সাবেক ভিডিও জকি রণবীর শোরেকে ২০১০ সালে বিয়ে করেন কঙ্কণা। পরের বছর
সন্তানের মুখ দেখেন এ তারকা দম্পতি। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এক সাক্ষাত্কারে
কঙ্কণা বলেছিলেন, ‘আমি প্রথম যখন অন্তঃসত্ত্বা হলাম, তখন ধূমপান থেকে দূরে
থাকতে হয়েছিল আমাকে। বিষয়টি আমার কাছে সত্যিই অনেক কঠিন ছিল।’
ধূমপান
নিষিদ্ধের বিপক্ষে কঙ্গনা রানাউত রুপালি পর্দায় বহুবার ধূমপানের দৃশ্যে
অভিনয় করতে দেখা গেছে ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’ তারকা কঙ্গনা রানাউতকে। বাস্তব
জীবনেও তিনি চেইন স্মোকার। একটার পর একটা সিগারেট না খেলে তাঁর চলেই না।
তিনি
ধূমপানে এতটাই আসক্ত যে, ধূমপান নিষিদ্ধের সরাসরি বিরোধিতাও করেছেন।
ধূমপানের পক্ষে নিজের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে একবার তিনি বলেছিলেন, ‘ধূমপান
করা কিংবা না করা নিতান্তই ব্যক্তিগত একটি বিষয়। কখনোই ধূমপান নিষিদ্ধ করা
উচিত নয়।’মনীষা কৈরালা
বিয়ের আসরেও ধূমপান থেকে
দূরে থাকতে পারেননি মনীষা কৈরালা। নেপালি বংশোদ্ভূত বলিউডের অভিনেত্রী
মনীষা কৈরালা। বলিউডে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন নেপালের সম্ভ্রান্ত রাজনৈতিক
পরিবারের এই মেয়ে। তাঁর ধূমপানের আসক্তির বিষয়টি কম-বেশি অনেকেরই জানা।
কিন্তু
এই আসক্তির মাত্রা যে কতটা প্রবল ছিল, তা হয়তো সবাই জানেন না। ফেসবুকে
ব্যবসায়ী সম্রাট দাহালের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল মনীষার। পরিচয় থেকে
প্রেম, অতঃপর বিয়ে। ২০১০ সালে নেপালে তাঁদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন
হয়। জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনটিতেও ধূমপান থেকে নিজেকে দূরে রাখতে
পারেননি মনীষা। বিয়ের আসরে বিয়ের পোশাক পরেই ধূমপান করতে দেখা গেছে
তাঁকে।
ভালোবেসে বিয়ে করলেও সম্রাটের সঙ্গে দুই
বছরের বেশি সংসার করতে পারেননি মনীষা। ২০১২ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
ধূমপানে প্রবলভাবে আসক্ত হলেও খুশির খবর হলো, সম্পূর্ণ নিজ চেষ্টায় এই
মরণ নেশা থেকে বের হয়ে এসেছেন ৪৩ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী।