বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৭, ২০১৪

এক হিরোইন আর এক ভিলেন

বেশির ভাগ সন্তানের কাছে বাবাই কিন্তু তাদের ছেলেবেলার নায়ক, এমনকি বড়বেলাতেও। আর সেই বাবাকে যদি সবাই ‘ভিলেন’ বলে ডাকে—তাহলে কেমন লাগে বলুন? টিভিতে কোনো ছবিতে বাবার ভিলেনগিরি দেখলেই তাই রেগেমেগে বসে থাকত শ্রদ্ধা। বাবা বাসায় ফিরলেই মেয়ে রাজ্যের অভিযোগ নিয়ে বলত—‘তুমি সবসময় শুধু ভিলেন হও কেন বাবা? তুমি নায়ক হতে পার না?’ প্রায় ৭০০ ছবির অভিনেতা বলিউডের ‘কমিক’ ভিলেন শক্তি কাপুর একমাত্র মেয়ের এমন অভিযোগে শুনে হয়তো হেসেই ফেলতেন। মা শিভাঙ্গি কাপুরও নাকি মেয়েকে মাঝেমধ্যে বোঝাতেন যে এসব বাবার অভিনয়। আসলে ছোট শ্রদ্ধা তখন কি আর বুঝতেন বাবা খল চরিত্রেই বেশি মানানসই? এই ভিলেন বেশেই তো শক্তি কাপুর জয় করেছেন দর্শকের মন। সেই শ্রদ্ধাই কিনা শেষমেশ এক ভিলেনের প্রেমে থিতু হলেন? বাস্তবে না হলেও, বাবার মতো সেই বড় পর্দাতেই। বলিউডের জেনারেশন ওয়াইয়ের অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুরের নতুন ছবি এক ভিলেন সেই কথাই তো বলছে।
হ্যাঁ, অভিনয়টা শ্রদ্ধার রক্তের সঙ্গে মিশেই ছিল! শুধু বাবা নন, মাসি পদ্মিনী কোলাপুরীও ছিলেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়িকা। মুম্বাইয়ে স্কুল-কলেজের পাট চুকিয়ে থিয়েটার স্টাডিজ বিষয়ে পড়তে শ্রদ্ধা ভর্তি হয়েছিলেন আমেরিকার বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে। পড়াশোনা শেষ না হতেই ডাক পড়ে বলিউডে। ২০১০ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে শ্রদ্ধা তিন পাত্তি ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা। ছবিতে হলিউডের স্যার বেন কিংসলে, বলিউডের অমিতাভ বচ্চন থাকার পরও বক্স অফিসে তিন পাত্তির বাত্তি জ্বলেনি। শ্রদ্ধা ভালো অভিনয় করলেও রয়ে যান আলোচনার বাইরে। ২০১১-তে শ্রদ্ধা অভিনীত লাভ কা দ্য অ্যান্ড ছবিটিও চলে যায় ফ্লপের খাতায়। তবে ছবিটি শ্রদ্ধার ক্যারিয়ারের ‘দ্য অ্যান্ড’ হয়নি যদিও দুটি ছবির চরম ব্যর্থতার কারণে শ্রদ্ধা চলে গিয়েছিলেন সবার চোখের আড়ালে। অবশেষে ২০১৩ সালে এসে ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ল শ্রদ্ধা কাপুরের। মোহিত সুরির আশিকি টু ছবিতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়াটা তাঁর জন্য ছিল হতাশা ও ব্যর্থতার পর অনেক আশার সঞ্চার। চমকে দিলেন শ্রদ্ধা কাপুর। এমন একটা কোমল বাতাসের ছোঁয়া পেলেন দর্শক, যা সহজে ভোলার নয়। বেকারত্বের সাইনবোর্ড ভেঙে শ্রদ্ধার গায়ে লেগে যায় ব্যস্ত নায়িকার তকমা।
এক ভিলেন ছবিতে শ্রদ্ধা কাপুরসেই মোহিত সুরির হাত ধরেই মুক্তি পেল শ্রদ্ধার ক্যারিয়ারের চতুর্থ ছবিটাও। মোহিত সুরির ক্যারিশমা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। রাজ-দ্য মিস্টেরি কন্টিনিউস, মার্ডার-টু কিংবা আশিকি টু দিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর দক্ষতা। সেই ছাপ রাখলেন নতুন ছবি এক ভিলেন-এও। মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহেই ১০০ কোটির ক্লাবে ঢুকে পড়েছে সুপার হিটের তকমা পাওয়া এই ছবিটি। ছবিতে প্রথমবারের মতো রুপালি পর্দায় দর্শক দেখতে পাবে শ্রদ্ধা কাপুর আর সিদ্ধার্থ মালহোত্রার রসায়ন। দুই বছর আগে করণ জোহরের স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছিল সিদ্ধার্থের। তবে শুধু সিদ্ধার্থ আর শ্রদ্ধাই নয়। এই ছবিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রীতেশ দেশমুখ। রীতেশকে দর্শক কমেডি ছবিতে দেখেই অভ্যস্ত। কিন্তু এবার তাকে দেখা যাবে খল চরিত্রে। ছবির নামেই বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে খলচরিত্রটিই ছবির মূল আকর্ষণ। তবে ছবিতে সেই ভিলেন কে? রিতেশ দেশমুখ নাকি সিদ্ধার্থ মালহোত্রা? ছবির প্রোমো দেখে দর্শকের মনে এমন অনেক প্রশ্নই জেগেছে। কিন্তু আসল গল্পটা কী, আর চমকটাই বা কোথায় সেটা জানতে হলে অবশ্যই দেখতে হবে এক ভিলেন।
ইন্ডিয়া টাইমস, বলিউড হাঙ্গামা, টাইমস অব ইন্ডিয়া, উইকিপিডিয়া অবলম্বনে