মঙ্গলবার, জুলাই ০১, ২০১৪

রয়টার্সের চোখে :২০২৫ সালের পৃথিবী

ভবিষ্যতে কী আছে?২০২৫ সাল নাগাদ কেমন হবে পৃথিবী? আমাদের বাড়ি, সংবাদপত্র সবকিছুই হবে ডিজিটাল। অনেকেরই বিমান চালানোর লাইসেন্স থাকবে, আর খাবারের অভাব থাকবে না—এমন ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিউইয়র্কের থম্পসন রয়টার্সের বিশ্লেষকেরা সম্প্রতি ১০টি বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
রয়টার্সের ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অ্যান্ড সায়েন্স বিজনেসের জন্য ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন ২০১৫: ১০ প্রেডিকশানস অব ইনোভেশন’ নামের একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বিশ্লেষকেরা। প্রতিবেদনে আগামী এক দশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ১০টি বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। এই ভবিষ্যদ্বাণী করতে  বিশ্বের বিভিন্ন পেটেন্ট তথ্য ও বিজ্ঞান বিষয়ক ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করেছেন তাঁরা।
থম্পসন রয়টার্সের আইপি অ্যান্ড সায়েন্স বিভাগের প্রেসিডেন্ট বাসিল মোফতাহ জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ের বিভিন্ন গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম ও ব্যবসায়িক বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে আমরা চমত্কার কিছু বিষয়ের ওপর আলোকপাত করতে পেরেছি যা আগামী এক দশকে বাস্তবে দেখা যাবে।
মোফতাহ আরও জানিয়েছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে এখন অঢেল বিনিয়োগ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে। এসবের মধ্যে থেকে শীর্ষ ১০টি বিষয় আমরা তুলে এনেছি।

রয়টার্সের চোখে ২০২৫
সবকিছুই হবে ডিজিটাল
গাড়ি থেকে শুরু করে বাড়ি পর্যন্ত স্মার্ট হয়ে যাবে। ব্যবহারকারীর সঙ্গে প্রয়োজন অনুসারে গাড়ি ও বাড়ি যোগাযোগ রাখতে পারবে। গেরস্থালি যন্ত্রপাতিও বুদ্ধিমান হবে, নিজে থেকে চিন্তা করতে পারবে। প্রত্যেক যন্ত্র পরস্পরের ভাষা বুঝবে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে।
বিলুপ্ত হবে ডিমেনশিয়া
জেনেটিকস বা বংশগতির গবেষণার ক্ষেত্রে উন্নতির ফলে আগামী এক দশকেই ডিমেনশিয়া রোগটি বিলুপ্ত করা সম্ভব হতে পারে। আগেভাগে রোগ শনাক্ত ও উন্নত প্রতিরোধ ব্যবস্থার ফলে এই রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
বিশ্বের বৃহত্তম শক্তি উত্স হবে সোলার
সোলার বা সৌরশক্তি হবে বিশ্বের অন্যতম শক্তির উত্স। সৌরশক্তি সংরক্ষণ, সংগ্রহ করার পদ্ধতি ও সৌরশক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর প্রক্রিয়ার উন্নয়নের ফলে বিশ্বের প্রাথমিক শক্তির উত্স হবে সোলার।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব হবে
মানুষের জিনগত পরিবর্তন আনা বাস্তবে সম্ভব হবে ফলে ডায়াবেটিস ১ টাইপের রোগ নির্মূল করা যাবে| অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে ইনসুলিন নির্ভর (ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস) ডায়াবেটিস মেলিটাস বা টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়।
খাদ্য ঘাটতি কমে যাবে
বজ্র বিদ্যুত্ প্রযুক্তি, জেনেটিক ক্রপ মডিফিকেশন প্রযুক্তির মতো উন্নত প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বে খাদ্য ঘাটতি কমে যাবে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি অতীতের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
ইলেকট্রিক এয়ার ট্রান্সপোর্টেশন শুরু হবে
হালকা পাতলা নভোযান তৈরির প্রকৌশল ও নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তির কল্যাণে বৈদ্যুতিক গাড়ি মাটিতে চলবে আবার আকাশেও উড়তে পারবে। ছোট ছোট আকাশযান স্বল্প খরচে যাত্রী বহন করবে। নতুন ধরনের এই বিমানগুলো খুব অল্প জায়গার মধ্যে ওঠানামা করতে সক্ষম হবে বলে লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়টি সবার অধিকার হিসেবে গণ্য করা হবে।
পেট্রোলিয়ামভিত্তিক প্যাকেজিং অতীত হবে
সেলুলোজ ভিত্তিক প্যাকেজিং ব্যবস্থা চালু হবে। শতভাগ পচনশীল এই প্যাকেজিং ব্যবস্থার ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার ফলে পেট্রোলিয়ামভিত্তিক প্যাকেজিং ব্যবস্থার সমাপ্তি ঘটবে।
ক্যানসার চিকিত্সার বিপদ কমবে
ক্যানসার চিকিত্সার জন্য কার্যকর ওষুধ তৈরি হবে যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে সামান্য। নির্দিষ্ট প্রোটিন ও অ্যান্টিবডির ব্যবহারের ফলে ক্যানসারের ওষুধের বিষাক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমানো সম্ভব হবে।
জন্মের সময় ডিএনএ ম্যাপিং নিয়ম হয়ে দাঁড়াবেকৃত্রিম ডিএনএ নিয়ে গবেষণা চলছে
ন্যানো-টেকনোলজি ও বিগ ডাটা টেকনোলজির ব্যবহারে শিশুর জন্মের সময় ডিএনএ ম্যাপিং করাটা সাধারণ নিয়ম হয়ে দাঁড়াবে। আগে থেকে ডিএনএ ম্যাপ থাকায় পরবর্তীতে শিশুর রোগ নির্ণয় করা সহজ হবে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাবে।
কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন সহজ হবে২০২৫ সাল নাগাদ হয়তো মানুষকে মহাকাশে টেলিপোর্ট করা বা তাত্ক্ষণিকভাবে পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না তারপরও এক্ষেত্রে গবেষণায় যথেষ্ট উন্নতি হবে যাতে কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন (কোয়ান্টাম তথ্যের স্থানান্তর) সহজ হবে। বর্তমানে এই ক্ষেত্রটিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রচুর বিনিয়োগ করছে এবং কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে। এই ধারণাটি সম্ভব ও প্রয়োজনীয় বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের। (ডেইলি মেইল)