বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসে পলিসি পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেছেন, আলোচনা করেও কোন লাভ নেই। আলোচনায় বসলে শুধু ঝগড়া হবে, সময় নষ্ট হবে। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ১৪ দলের শরিক গণ-আজাদী লীগের প্রয়াত সভাপতি আবদুস সামাদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণ-আজাদী লীগের সভাপতি আলহাজ আবদুস সামাদ গত ১৩ই জুন মৃত্যুবরণ করেন। আলোচনা সভায় বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে নাসিম বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর তারা দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। তারা সব হারিয়েছেন। বাস ছেড়ে দিয়েছেন, ট্রেনও ফেল করেছেন, অতএব অপেক্ষা করুন। ২০১৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে তার আমলেই নির্বাচন হবে। এর জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে থাকুন। তিনি বলেন, পৃথিবীর সকল দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় আমাদের দেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে। ইন্দোনেশিয়ায় সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে নির্বাচন হয়েছে, ভারতে সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে নির্বাচন হয়েছে। গত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন না হলে থাইল্যান্ডের মতো সামরিক শাসন জারি হতো আমাদেরও। নাসিম বলেন, বিএনপি এখন স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করছে। তারা ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। বারবার তারা ক্ষমতায় এসেছে। এত কথা বলে কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালে সমুদ্রসীমা নিয়ে মামলায় যায়নি। তারা সমস্যা জিইয়ে রেখেছিল। আমরা স্লোগানের রাজনীতি করি না। টেবিলে বসে সমস্যার সমাধান করি। আওয়ামী লীগ মামলা করে আইনি লড়াইয়ে সমুদ্র জয় করেছে। দেশে বর্তমানে শান্তি বিরাজ করছে জানিয়ে সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন’ কিছু ঘটনা ছাড়া দেশে শান্তি বিরাজ করছে। নারায়ণগঞ্জ, ফেনী সবখানেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এ জন্য মন্ত্রীর জামাইকে পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়নি। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গণ-আজাদী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদের কর্মময় জীবনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমার দেখা সৎ রাজনীতিবিদদের একজন ছিলেন তিনি। সামপ্রদায়িকতার মাঝেও একজন ধর্মপ্রাণ অসামপ্রদায়িক মানুষ ছিলেন আবদুস সামাদ। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, খালেদা জিয়া সরকারের পতনের হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু আন্দোলন ও রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার তিনি হারিয়েছেন। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন মরহুম আব্দুস সামাদের পুত্র ব্যারিস্টার এএসএ বারী। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ গণ-আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস কে শিকদার। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আসাদুল্লাহ তারেক, গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. শহীদুল্লাহ শিকদার প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।