মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০১৪

সব খুনি এক হয়ে দেশে খুন-গুমের রাজত্ব কায়েম করেছে- খালেদা জিয়া

সব খুনি এক হয়ে দেশে খুন-গুমের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ২০ দলীয় জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বলেছেন, স্বাধীনতার পর জাসদ গণবাহিনী গঠন করে দেশের হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে। সেই জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু এই সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আরেক খুনি এরশাদও এই সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সব খুনি এক হয়ে দেশে এখন খুন-গুমের রাজত্ব চালাচ্ছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল চত্বরে  ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, দেশে কোন বৈধ সরকার নেই। জবরদখলকারী সরকার ক্ষমতায় বসে আছে। কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে দেশ অতিক্রম করছে। রমজানেও প্রতিদিন মানুষ খুন-গুম হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব তারাই টাকার বিনিময়ে মানুষের জীবন হরণ করছে। এই খুন-গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ‘আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে’ অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ যত লীগ আছে সবাই এখন সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিতে নেমেছে। ফ্রি স্টাইলে চলছে দুর্নীতি আর খুন-গুম। ঈদের আগে সরকারি দলের লোকজন ব্যবসায়িক মেজাজে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ ব্যবসা করতে পারছে না। সরকার ব্যাংকগুলো দেউলিয়া করে দিয়েছে অভিযোগ করে ২০ দলীয় জোট নেতা বলেন, সরকারি সব ব্যাংক খেয়ে ফেলেছে। এখন তারা বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও হাত দিয়েছে। আসলে তারা দেশটাকেও খেয়ে ফেলতে চায়। খালেদা জিয়া বলেন, দেশে দুই আইন চলছে। আওয়ামী লীগের লোকজন অপকর্ম করলেও পার পেয়ে যায়। আর বিএনপি বা অন্য দলের লোক যাতে আন্দোলন করতে না পারে, সে জন্য মিথ্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমাদের এখন ভয় পেলে চলবে না। জালেম সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ঈদের পর ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নেমে সরকারকে বিদায় করবো। যাতে দেশের মানুষ রক্ষা পায়, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক একেএম আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিকল্পধারার সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গনি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ২০ দলীয়  জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. এমএ মাজেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ, এসএমএ ফয়েজ, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, সাবেক প্রোভিসি প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, প্রফেসর ড. সদরুল আমিন, প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ, কলামনিস্ট মাহফুজউল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. জিন্নাতুন নেসা তাহমিনা খাতুন, চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের মহাসচিব এমএ আজিজ, ডা. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, প্রসেফর ডা. মতিউর রহমান মোল্লা, প্রফেসর ডা. আফতাব আহমেদ, ডা. এম এ কুদ্দুস, সৈয়দ আনোয়ারুল হক, প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া প্রমুখ অংশ নেন। এছাড়া দেশের প্রতিটি জেলা থেকে ড্যাবের কয়েক হাজার চিকিৎসক এই ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ড্যাবের মহাসচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। এদিকে আজ রাজধানীর পান্থপথের সামারাই কনভেনশন সেন্টারে বিকল্পধারা বাংলাদেশ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন খালেদা জিয়া।