শুক্রবার, জুলাই ১৮, ২০১৪

প্রেমের ফাঁদ পেতে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে সরে পড়ে ইন্দোকন্যারা!

প্রেমের ফাঁদ পেতে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে সরে পড়ে ইন্দোকন্যারা। তারপর? তারপর আবারও স্বপ্ন গড়ার গল্প দেখে বাংলাদেশি ছেলেরা, হয়তো সেটা কখনো হয় দুঃস্বপ্ন! স্বপ্নের মালয়েশিয়ার বাস্তব চিত্র এমনি নিষ্ঠুর।
মালয়েশিয়ার রাস্তায় স্বপ্ন ওড়ানো বাংলাদেশিদের জীবনের ডায়েরির পাতা উল্টিয়ে দেখা যাচ্ছে, যে ছেলেটি দেশে কখনো কোনো ধরনের কাজ করেনি, এখন সে মালয়েশিয়ার রাস্তায় ঝাড়ুদারের কাজ করে। নিয়তির খেলাকে ভাগ্য মনে করে কাজ করে চলে সে। কারণ, স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমাতে এক গাদা সুদের টাকা জমিয়ে এসেছে সে, সঙ্গে ‘বন্ধক’ দিয়ে এসেছে মা-বাবার সুখ-শান্তিও। যে কোনো উপায়ে মা-বাবার মুখের হাসি ফেরাতে হবে, সুদের টাকা শোধ করে নত করে দিতে হবে মহাজনের রক্তচক্ষু। কেউ হয়তো এই সংগ্রামী জীবনে টিকে থাকে, আবার কেউ থেমে যায় মাঝপথেই। স্বপ্নের দেশে এসে স্বপ্নের পুঁজি জীবনটাকেই শেষ করে দেন কেউ কেউ।
অনেকে মালয়েশিয়ায় থেকে গেছেন বছরের পর বছর। এমনও নজির আছে, ২০ বছর মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন, কিন্তু একবারের জন্যও দেশে ফেরেন নি। দেখতে যান নি প্রিয় মা-বাবার মুখ। এরা মালয়েশিয়ায় বিয়ে করে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। এদের পাঠানো রেমিটেন্সে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। আরেক ধরনের বাংলাদেশি আছেন যারা স্বপ্ন বুনতে এসে অন্যের স্বপ্ন বোনার ‘বলি’ হয়ে যান। খোলাসা করে বললে, ইন্দোকন্যাদের বলি হন।
মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ান, ভিয়েতনাম বারমিজ, ফিলিপিনো, ইন্ডিয়ান, থাইসহ অনেক দেশের মেয়েদের বসবাস। ছেলেদের মতো ব্যবসা-বাণিজ্যেও এখানে চাইনিজ মেয়েরা অনেকটা এগিয়ে। ব্যবসা বাণিজ্যের মতো পোশাক-পরিচ্ছদেও খানিকটা এগিয়ে চাইনিজ মেয়েরা। অবশ্য এরা সংক্ষিপ্ত জামা পরলেও প্রতারণা-ধোঁকাবাজি বোঝে না। আর চাইনিজ মেয়েরা সাধারণত চাইনিজ ছেলেদের সঙ্গেই প্রেম করে। আর ইন্ডিয়ানদের মতো এখানকার ফিলিপিনো মেয়েরাও খানিকটা সংগ্রামী। তবে, এদের পছেন্দের তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশি ছেলেরা। কী কারণে?
ফিলিপিনো ক্যাটলিক মরিয়াম বলেন, বাংলাদেশি ছেলেরা অনেক স্মার্ট ও কঠোর পরিশ্রমী। তারা স্ত্রীদের দেখাশোনা করে। মরিয়ামের মতে, তাদের ধর্মের সঙ্গে মুসলিম ধর্মের অনেক মিল আছে বলে বাংলাদেশিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে তেমন একটা বাধা থাকে না। বাংলাদেশিরা অনেক কঠোর পরিশ্রম করে। স্ত্রীদের কোথাও কাজ করতে দেয় না।
এছাড়া, স্থানীয় ছেলেদের আলস্যের কারণে বাংলাদেশিদের প্রতি তাদের দুর্বলতা আরও বাড়তে থাকে। তবে মালায়সিয়াতে , কিছু বাংলাদেশি মালয় মেয়েদের বিয়ে করে সন্তান জন্ম দিয়ে দেশে চলে যায় বলে ওই স্বামীহারা মেয়েদের অবস্থা বিবেচনা করে ২০০৭ সালের পর থেকে বাংলাদেশিদের বিয়ের উপর কড়াকড়ি আরোপ করে। কিছু ব্যক্তির প্রতারণার কারণে বাংলাদেশিদের ওপর থেকে মালেশিয়ান মেয়েদের শ্রদ্ধা, ভক্তি ও বিশ্বাস উঠে যায়।
বাংলাদেশি ছেলেদের প্রতি রহস্যজনকভাবে এখনও আগ্রহ রয়েছে ইন্দোনেশিয়ান মেয়েদের। মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ানদের আগমনের পথ অনেক বেশি সহজ প্রতিবেশী হওয়ার কারণে। ইন্দো মেয়েরা অনেক বেশি কর্মঠ। তাদের চাতুর্য এর চেয়েও বেশি। মালায়সিয়াতে বেশিরভাগ বাংলাদেশি ছেলের বান্ধবী ইন্দোনেশিয়ান। পেনাং, জোহর বারু, কেদাহ প্রদেশের শিল্প কারখানাগুলোতে হাজারো বাংলাদেশি ও ইন্দোনেশিয়ান কাজ করে।
আমিন মোস্তফা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এক ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন। ইন্দোনেশিয়ান ওই মেয়ের ভরণ-পোষণে অর্থও ঢালছেন। ওই মেয়ের প্রেমের ফাঁদে পড়ে টাকা উড়াচ্ছেন- এমনটি স্পষ্ট না বললেও পুরোপুরি অস্বীকার করেন নি আমিন।
সূত্র বলছে, আমিনের মতো ইন্দো মেয়ের প্রেমের ফাঁদে পড়ে হাজারো বাংলাদেশি ছেলে ফতুর হয়ে গেছে। জামাল জানান, ইন্দো মেয়েরা সাধারণত থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলে যে কোনো বাংলাদেশি ছেলের সঙ্গে একত্রে বসবাস করবে। কিন্তু ভরণ-পোষণের অর্থ ফুরিয়ে গেলে অন্য কারও সঙ্গে চলে যেতে একটুও দ্বিধা করবে না।
সূত্র জানায়, অর্থের বিনিময়ে নিজের সতীত্ব বিক্রি করতেও দ্বিধা করে না অভাবতাড়িত ইন্দো মেয়েরা। সম্ভ্রমের বিনিময়ে নিজের বাবা-মা ও ছেলে-সন্তানের জন্য নিয়মিত টাকা উপার্জন করে ইন্দো নারীরা। অনেক বাংলাদেশী ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের প্রেমের ফাঁদে পড়ে সব হারিয়েছেন, বাবা-মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সব কিছু হারিয়ে এখন তিনি পথের ফকির।
এক বাংলাদেশীজানান, দীর্ঘদিন ধরে ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে তিনি কখনো জানেন নি যে ওই মেয়ের স্বামী ও তিন সন্তান আছে। প্রেমের ফাঁদ পেতে তার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়েছেন ওই নারী। আরও স্বীকার করেন, এমন প্রেমের ফাঁদ পেতে বাংলাদেশি ছেলেদের অর্জিত অর্থ নিজ দেশে পাঠায় ইন্দোকন্যারা। আর শেষ অবধি পথে বসতে হয় বাংলাদেশি ছেলেদের।