মহাকাশ বিজ্ঞানে পশ্চিমি দুনিয়ার একচেটিয়া দখলদারিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে নজির গড়েছে ভারত। গতকাল সোমবার সকালে ভারতের রকেটে চেপে মহাকাশ পাড়ি দিল পাঁচটি বিদেশি উপগ্রহ। উৎক্ষেপণ সফল হতেই টেনশনে দম বন্ধ করে থাকা ইসরোর বিজ্ঞানীদের মুখে তখন চওড়া হাসি।
অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে ইসরো পিএসএলভি-সি-২৩-রকেটের মাধ্যমে উপগ্রহগুলো উৎক্ষেপণ করা হয়।
সেখানে উপস্থিত থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উৎক্ষেপণের পর ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, 'এটি ভারতবাসীর গর্বের মুহূর্ত। এর সাক্ষী হতে পেরে আমি গর্বিত।'
তিনি সার্ক দেশগুলোকে উন্নত পরিসেবা দিতে ভারতকে উপগ্রহ তৈরির প্রস্তাব দেন। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের এক নায়কের একটি জনপ্রিয় উক্তি টেনে নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'এখনো পর্যন্ত আমরা অনেক কিছুই করেছি, কিন্তু তবু 'ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর' (এই হৃদয় আরো চায়)। আমি আমাদের বিজ্ঞানী দলকে সার্ক দেশগুলোতে উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্য উপগ্রহ তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছি। এর ফলে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোরও সহায়তা হবে।
ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছিল পাঁচটি উপগ্রহ। মহাকাশ থেকে পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী ফ্রান্সের উপগ্রহ স্পট-৭ (৭১৪ কেজি), জার্মানির আইস্যাট (১৪ কেজি), কানাডার এনএলএস ৭.১ ও এনএলএস ৭.২ (১৫ কেজি) এবং সিঙ্গাপুরের ভেলোক্স-১ (৭ কেজি) উপগ্রহগুলো উৎক্ষেপণ করে পিএসএলভি-সি২৩-রকেট। মহাকাশে পৌঁছে এনএলএস ৭.১ ও এনএলএস ৭.২ উপগ্রহটির কাজ হবে পুরো প্রক্রিয়ার দিক ও গতি নিয়ন্ত্রণ। ভেলোক্স-১-এর কাজ মহাকাশ থেকে তোলা ছবি প্রদর্শন করা এবং পুরো প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ। পিএসএলভি-সি২৩-রকেট উৎক্ষেপণের কাজ শুরু হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের আমলে। মোদি বলেন, 'আমি হলিউডের সিনেমা 'গ্রাভিটি'র কথা শুনেছি। মহাকাশে ভারতের রকেট পাঠাতে ওই সিনেমা বানানোর চেয়ে কম খরচ পড়েছে।' সূত্র : আইএএনএস।
- See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/deshe-deshe/2014/07/01/102209#sthash.Rts5xZxg.dpuf