রবিবার, জুলাই ০৬, ২০১৪

কোয়ার্টার ফাইনালেই থামতে হলো কোস্টারিকানদের

বিশ্বকাপের ‘ঐতিহ্য কেন্দ্রিক’ জায়ান্ট উত্তরণের কল্পিত চিত্রলিপি ওলটপালট করে দিয়ে মহাযজ্ঞের যাত্রা শুরু করেছিল কোস্টারকা। ভয়ডরহীন ও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বড় বড় দলের বুকে ছুরি বসিয়েছে ‘লা টিকোস’রা। ছোট দল হয়েও জন্ম দিয়েছে দারুণ রূপকথার। লিখেছে অনন্য এক ইতিহাস। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে ডাচদের সাথে আর পেরে ওঠেনি লুই পিন্টোর দল। শনিবার সালভাদরের অ্যারেনা ফন্তেনোভাতে পেনাল্টি শুটআউটে ৪-৩ গোলে হার মানে মধ্য আমেরিকার দেশটি। মূলত ডাচ গোলকিপারের কাছে হার মানে কোস্টারিকানরা।
এবারের বিশ্বকাপে ব্রায়ান রুইজ ও জোয়েল ক্যাম্পবেলদের বীরত্বগাথা ছাড়াও কোস্টারিকার সাফল্যর পেছনে নাকি কাজ করেছে সান্তোসের ‘পানি পড়া’। স্থানীয় মানুষজনের বিশ্বাস- এই এলাকার পানিতে নাকি অদ্ভূত এক ক্ষমতা আছে। যা পান করলেই মানুষের জীবনে উন্নতি হয়। শোনা যাচ্ছে গ্রুপ পর্ব চলাকালীন সময়ে কোস্টারিকা কোচ পিন্টো নাকি সেই জল এনে দেন ফুটবলারদের। সমর্থকদের বিশ্বাস, সেই জলের মহিমাতেই কোস্টারিকান ফুটবলাররা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পেরেছেন। কিন্তু শেষ আটে এসে আর ওই পানি পড়ায় কাজ হলো না আর। এদিন ভাগ্যের পেনাল্টি শুটআউটে ফ্লাইং ডাচম্যানদের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালেই থামতে হলো এই বিশ্বকাপের ‘পিপলস চয়েস’ কোস্টারিকানদের।
শেষ আটে নেদারল্যান্ডস ও কোস্টারিকা মহারণকে এক কথার ‘ক্যাচলাইনে’ সবচেয়ে জমাট রক্ষণ আর সবচেয়ে কার্যকরী আক্রমণ ভাগের লড়াই বলে দাবি করছিল ফুটবলবোদ্ধারা। তাত্ত্বিকদের সেই পূর্বানুমান একেবারে মিথ্যা হয়ে যায়নি। সালভাদরে একপেশে ম্যাচ হতে দেয়নি ব্রায়ান রুইজ-নাভাসরা। ছোট ছোট ত্রিভূজ একে আক্রমণে উঠেছে সিংহ-হৃদয় এই অখ্যাতরা। আবার যুথবদ্ধ হয়ে মোকাবেলা করেছে আরিয়েন রোবেন-ওয়েসলি স্নেইজারদের পাগুলে সব দৌঁড় আর ভয়ংকর আক্রমণও। তাই প্রথমার্ধ নিস্ফলাই থেকেছে দুই দলের দ্বৈরথ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের গোল পায়নি দুই দল। সংযুক্ত সময়ের খেলাতেও ০-০ গোলের স্কোরলাইন থিতু থাকে স্কোরবোর্ড। শেষে পেনাল্টিতে ভাগ্য নির্ধারিত হয় বিজয়ীর। যাতে শেষ হাসি ডাচদের। এদিন নেদারল্যান্ডের পক্ষে চারটি গোল করেন আরিয়েন রোবেন, রবিন ভন পার্সি, ওয়েসলি স্নেইজার ও ডার্ক কুইট। তবে ‘দ্য অরেঞ্জ’দের জয়ের মূল নায়ক তাদের গোলকিপার সিলেসিন। প্রতিপক্ষের দুটি স্পট কিক আটকে দেন তিনি।
এর আগে-পরে অবশ্য দারুণ কিছু সুযোগ পেয়েছে দুই দলই। খেলার ৮২ মিনিটে যেমন গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় ডাচরা। আরিয়েন রোবেনকে ফাউল করলে কোস্টারিকার ডি বক্সের সামনে ফ্রি-কিক পায় নেদারল্যান্ডস। তাতে ফ্রি-কিক নেন স্নেইজার। কিন্তু দুভাগ্যের কারণে গ্যালাতাসারে তারকার নেয়া ফ্রি-কিক গিয়ে গোলপোস্টে আঘাত হানে। তিন মিনিট বাদে ফের গোলের সুযোগ আসে লুইস ফন গলের শিষ্যদের কাছে। কিন্তু স্নেইজারের থালায় সাজিয়ে দেয়া বলেও পা ছোঁয়াতে পারেননি ভন পার্সি। এর আগে খেলার ২১ মিনিটেও পার্সি নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হন। কোস্টারিকানদের জন্য গোলের সবচেয়ে সহজ সুযোগ মিস করেন জিয়ানকার্লো গনজালেস। অতিরিক্ত সময়ের খেলাতেও রবিন ভন পার্সি ও জোয়েল ক্যাম্পবেলরা অসংখ্য গোল মিস করেছে।