শুক্রবার, জুলাই ০৪, ২০১৪

সংসদে হৈ চৈ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি

বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় (বাজেট) অধিবেশনে সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও জাসদের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিলে সংসদে হৈ চৈ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি। বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদকে দায়ী করে জাতীয় পার্টির (জাপা) বক্তব্য এবং জবাবে জাসদের পক্ষ থেকে এদেশের গণতন্ত্র হত্যা ও গণহত্যার জন্য জাপাকে দায়ী করে দেয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সংসদে হৈ চৈ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বেসরকারি সদস্য হিসেবে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করতে গিয়ে কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, “স্বাধীনতার পর জাসদ সৃষ্টি না হলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাহস কেউ দেখাতো না। তারা গণবাহিনীর নামে প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখিয়ে এ দেশের হাজার হাজার মেধাবী যুবককে হত্যা করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে। গণমানুষকে হত্যা করা হয়েছে।”
ফিরোজ রশিদের এই বক্তব্যের পর তা খণ্ডন করতে গিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেন, “ফিরোজ রশিদ সাহেব অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গণবাহিনীসহ নানা প্রসঙ্গ তুলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। সরকারি দলের সদস্যরা তার বক্তব্যকে সমর্থন জানাচ্ছেন। এভাবে সরকারের এক শরিককে খুশি করতে গিয়ে আরেক শরিককে জবাই করা হচ্ছে। অথচ যাদের খুশি করা হচ্ছে তাদের বিষয়ে ৮১ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্র হরণসহ তারা সে সময় যে গণহত্যা চালিয়েছে সে অভিযোগও আমরা তুলতে পারি।”
এসময় বিরোধী দলের বেঞ্চে বসা জাসদ ও জাতীয় পার্টির সদস্যরা নিজ নিজ আসনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে থাকেন। সামনের সারির কাজী ফিরোজ রশিদ পেছনের সারির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহসহ জাতীয় পার্টির এমপিরা এসময় নিজ নিজ দলের পক্ষে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।
মঈনুদ্দীন খান বাদলের এ বক্তব্যের সাময়িকভাবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল সংসদ কক্ষে। তবে হুইপদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বেশিদূর গড়াতে পারেনি।
পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সমাপনী বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে শুরুতেই বলেন, সংসদের বৈঠকের পর কাজী ফিরোজ রশিদ এবং মাইনুদ্দীন খান বাদল মিলে মিশে নিজেদের মধ্যে ঘটে যাওয়া তিক্ততার অবসান ঘটাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এর আগে কাজী ফিরোজ রশিদ ভারত থেকে জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধকালীন ভারতে আদর্শিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা বিএলএফ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা আনার জন্য সংসদে দাবি উত্থাপন করেনন। মুক্তিযোদ্দা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সিদ্ধন্তা প্রস্তাবটি সমর্থন করলে সংসদে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।