শনিবার, জুলাই ০৫, ২০১৪

নারীরা যে ১০টি বিষয়ে অনুশোচনায় ভোগেন

সাংসারিক জীবনে নারীরা সর্বদা ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে সময় পার করেন। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন চাকরির সাথে জড়িত তাদের ব্যস্ততার শেষ নেই। নিজ কর্মস্থল ও পরিবার সামলাতে গিয়ে তাদের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা নিজেদের দোষী বলে মনে করেন।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৯৬ শতাংশ নারী এমন সমস্যার মুখোমুখী হন। প্রতিদিন অন্তত একবার হলেও তাদের এসব সমস্যা মানসিকভাবে পীড়া দেয়। এসব সমস্যা তাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।


মনোবিজ্ঞানী বিভারলি স্টোন এমন ১০টি সমস্যা ও কীভাবে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সে সব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
সোমবার টাইমস অব ইনডিয়াতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

১. সন্তানকে ঠিকমত সময় না দেয়া: নারীরা বাড়িতে ছোট সন্তান রেখে যখন অফিসে যান তখন বাচ্চাকে নিয়ে নানা চিন্তা করেন। এজন্য অফিসে ঠিকমত মনোযোগ দিতে পারেন না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেসব নারী এসব সমস্যায় ভোগেন তাদের উচিত পরিবার ও অফিসের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেছে নেয়া। প্রয়োজনে বাচ্চাকে দেখাশুনা করার জন্য আস্থাবান মানুষ রেখে দেয়া।

২. শারীরিক ওজন নিয়ে চিন্তা: অনেক নারী আছেন যারা বুঝতেই পারেন না যে, আসলে তার ওজন ঠিক আছে কি না। এজন্য তিনি কি করবেন তাও ভেবে ঠিক করতে পারেন না। এসব নারীর উচিত স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চাইলে নিয়মিত ব্যায়ামাগারে যাওয়া ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ মেনে চলা।

৩. টাকা ব্যয় নিয়ে সমস্যা: অনেক নারী আছেন যখন তিনি মদ্যপান করেন বা অতিরিক্ত কোনো খাতে টাকা ব্যয় করেন তখন তাদের কাছে কিছু মনে হয় না। কিন্তু পরবর্তীতে তারা নানা চিন্তা করেন। এজন্য তাদের উচিত আগে থেকে চিন্তাভাবনা করা আসলে তিনি যা করছেন সেটি ঠিক না ভুল।

৪. স্বামীর সাথে সময় ব্যয় করা: অনেকেই মনে করেন, তিনি তার স্বামীর সাথে যে সময় ব্যয় করছেন তা যথেষ্ট নয়। এ কারণে তার দাম্পত্য জীবনও সুখের হচ্ছে না। এমন নারীদের উচিত তার স্বামীর সাথে কথা বলে কিছু নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা এবং সে সময় বাইরে বেড়াতে যাওয়া বা দুই জন মিলে কিছু সময় কাটানো।

৫. রাস্তায় জ্যামে পড়া: রাস্তায় জ্যামে পড়লে পুরুষ হোক বা নারী হোক সবারই খারাপ লাগে। এজন্য সবার উচিত জ্যামে বসে থাকলে বাজার তালিকা ঠিক করা বা কোনো আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়ার কথা থাকলে তার অনুশীলন করা।

৬.আতিথেয়তার ক্ষেত্রে: নারীরা সর্বদা অতিথিপরায়ণ হন। তারা সবার সামনে সুন্দর খাবার উপস্থাপন করতে চান। এছাড়া তারা যখন কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যান তখন সেখানে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে চান। এর যদি একটু ব্যতিক্রম ঘটে তাহলে তারা নিজেদের দোষী বলে মনে করেন। এক্ষেত্রে তাদের একটু আগে থেকে সময় নিয়ে প্রস্তুতি নেয়া উচিত।

৭. জন্মদিনের কথা ভুলে যাওয়া: মানুষ তো পৃথিবীতে সর্বদাই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকে। এর মধ্যে তিনি জন্মদিনের কথা ভুলে যেতেই পারেন। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটলে তারা নিজেদের দোষী বলে মনে করেন। এক্ষেত্রে নারীদের মনে করা উচিত তিনি যা করছেন তা ভালোই করছে। দুই একটি বিষয় মনে না থাকতেই পারে।

৮. নিজের জন্য কিছু সময় রাখা: নারীরা তো সর্বদাই পরের জন্য ব্যস্ত থাকেন। তাই অনেকে এসব নিয়ে মাঝে মধ্যে নিজেকে দোষী মনে করেন। তিনি কেন নিজের জন্য সময় ব্যয় করতে পারছেন না এজন্য মানসিকভাবে খারাপ লাগে।

৯. বাবা-মার জন্য কিছু করতে না পারা: অনেকে আছেন যারা বাবা-মার জন্য ভালো কিছু না করতে পারলে নিজেদের কাছে খারাপ লাগে। আবার পারিবারিক সূত্রেও নারীদের নিজেদের দোষী মনে করার সমস্যা দেখা দেয়।

১০. না বলা: নারীদের পরিবারের সব দায়িত্ব নিতে হয়। সবাইকে যাতে তারা সন্তুষ্ট করতে পারেন এমন শিক্ষা তাদের পরিবার থেকে দেয়া হয়। যদি নারীরা কাউকে সন্তুষ্ট না করতে পারেন, যদি কোনো বিষয়ে কাউকে না বলেন তাহলে তারা নিজেদের দোষী মনে করেন।

নারীদের এখন পুরুষের মত ঘর বাহির দুটিই সামলাতে হয়। অনেক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার মধ্যে একটু ভুল হলেই তারা মনে করেন, এটি তার নিজের কারণে হয়েছে। তবে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, তাদের নিজেদের দোষী মনে না করে সেটি যাতে আর পরবর্তীতে না ঘটে সে জন্য উদ্যোগ নেয়া উচিত।