সোমবার, জুলাই ১৪, ২০১৪

ক্ষমা করবে কি ব্রাজিলিয়ানরা?

নিজেদের মাটিতে এবারের বিশ্বকাপ যেন ব্রাজিলের সব হারানোর টুর্নামেন্ট। নিজেদের মাটিতে ৩৯ বছর না হারার গৌরব হারিয়েছে তারা। হারিয়েছে বিশ্বকাপে দলগত সর্বোচ্চ ১২১ গোলের রেকর্ড। রোনালদোর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫ গোলের রেকর্ডও হাতছাড়া হয়েছে তাদের। নিজেদের মাটিতে ১৯৫০ সালের ফাইনালে উরুগুয়ের কাছে হেরে যতটা না কষ্ট পেয়েছিল ব্রাজিলিয়ানরা, এবার তারচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন। ১৯৫০-এর যাতনা ভুলাতে গিয়ে দেশবাসীকে আরও তিক্ততা উপহার দিয়েছেন খেলোয়াড়রা। ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। সেমিফাইনালে ইতিহাসের লজ্জা নিয়ে ৭-১ গোলে উড়ে গেছে জার্মানির কাছে। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে শনিবার মুখোমুখি হয়েছিল তারা। ব্রাজিলের পাগলা দর্শকদের তারপরও কোন আগ্রহের কমতি ছিল না। ব্রাসিলিয়ার গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে তারা দলকে সমর্থন দেয়ার জন্য এসেছিলেন দলে দলে। মনে করেছিলেন তৃতীয় স্থান অর্জন করে কিছুটা হলেও ক্ষতে প্রলেপ হবে। কিন্তু কই, ব্রাজিল দেখালো সেই একই ছবি। প্রায় এক হালি গোল হজম করতে হয়েছে তাদের। কি রক্ষণভাগ, কি মধ্যমাঠ, কি আক্রমণভাগ- সব জায়গায় ব্যর্থ ব্রাজিল। আর এতে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩-০ গোলে হেরে তৃতীয় স্থানও অর্জন করতে পারেনি স্বাগতিকরা। এমন হেরে আবারও ক্ষমা চাইলেন অধিনায়ক ও দলের অন্য খেলোয়াড়রা। সেমিফাইনালে হারের পর যেমন ক্ষমা চেয়েছিলেন ঠিক তেমনি। ব্রাজিল অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা বলেন, ‘আমরা এমন ফলাফলে বিশ্বকাপ শেষ করবো তা প্রত্যাশা করিনি। সমর্থকদের কাছে আবার দুঃখ প্রকাশ করছি। জানি, তারা আমাদের নিয়ে ছিঃ ছিঃ করছে। আর এটা করাই স্বাভাবিক। তাদের মনের অবস্থা অনেক খারাপ। অনেক কঠিন সময় পার করছে তারা। আর আমাদের কথা না বলাই ভাল।’
কাঁদতে কাঁদতে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের চোখের পানি যেন শুকিয়ে গেছে। নেদারল্যান্ডসের কাছে হারের পর তাই তারা ছিলেন নির্বাক। দলের তরুণ ফরোয়ার্ড অস্কার উদাস দৃষ্টিতে কখনও শূন্যে আবার কখনও মাটির দিকে তাকাচ্ছিলেন। মাঠ থেকে বের হওয়ার সময়টুকু তাদের কাছে হাজার বছরের মতো মনে হচ্ছিল। চেলসির ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড অস্কার তাই বললেন, ‘আমি আর কি বলবো! আমরা তৃতীয় স্থান নির্ধারণের জন্য মাঠে নেমেছিলাম। কিন্তু সেটাও করতে পারিনি। দিনটা আমাদের ছিল না। এমনকি বিশ্বকাপটাও আমাদের ছিল না। এমন হারের পর আমাদের আর কিছু বলার নেই। আমাদের সবার অবস্থা খুবই করুণ। সমর্থকরা ভেঙে পড়েছেন। তবে আমরা এই বাজে সময় পেরিয়ে আসার চেষ্টা করে যাবো।’